
ছবিঃ সংগৃহীত
ফলমূলকে সাধারণত স্বাস্থ্যকর খাদ্য হিসেবেই বিবেচনা করা হয়—ভরপুর ফাইবার, ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এই খাবারগুলো অনেকেরই পছন্দের তালিকায় থাকে। কিন্তু হায়দরাবাদভিত্তিক চিকিৎসক ড. সুধীর কুমার জানিয়েছেন, সব ফল সমান উপকারী নয়, বিশেষ করে যারা রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ে সচেতন, তাদের জন্য কিছু ফল সমস্যা তৈরি করতে পারে।
ফলের প্রাকৃতিক চিনি: উপকারী না ক্ষতিকর?
ফলে থাকা প্রাকৃতিক চিনি—মূলত গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ—রিফাইনড সুগারের চেয়ে তুলনামূলকভাবে ভালো হলেও, অতিরিক্ত ফ্রুক্টোজ শরীরে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স, চর্বিযুক্ত লিভার, ওজন বৃদ্ধি এবং ট্রাইগ্লিসারাইড বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। তবে গোটা ফলের ফাইবার এসব শর্করার শোষণ ধীরে করে, যা রক্তে চিনির আচমকা বৃদ্ধিকে প্রতিরোধ করে।
ডায়াবেটিকদের জন্য উপযুক্ত ফল
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) সম্পন্ন ফল বেছে নেওয়া জরুরি। এই ফলগুলো পুষ্টিকর হলেও রক্তে চিনি বাড়ায় না। ড. সুধীর কুমার যেসব ফলের সুপারিশ করেছেন, তা হলো:
-
বেরি জাতীয় ফল (স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, রাস্পবেরি, ব্ল্যাকবেরি): অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর এবং চিনি কম।
-
আপেল: উচ্চমাত্রার ফাইবার ও ভিটামিন ‘সি’।
-
নাশপাতি: রক্তে চিনি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ।
-
চেরি (ফ্রেশ ও আনসুইটেনড): চিনি কম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ।
-
পিচ: কম চিনি ও ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’তে ভরপুর।
-
বড়ই (প্লাম): ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভালো উৎস।
-
কিউই: ভিটামিন ‘সি’ ও ফাইবার সমৃদ্ধ।
-
কমলা: সতেজতা এনে দেয় এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ‘সি’ থাকে প্রাচুর্যে।
যেসব ফল খেতে হবে পরিমিতভাবে
অনেক ফল সরাসরি ক্ষতিকর না হলেও, এতে চিনির মাত্রা বেশি থাকায় নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে খাওয়া জরুরি। এসব ফলে হঠাৎ রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে:
-
কলা
-
আম
-
আঙুর
-
আনারস
-
তরমুজ
-
শুকনো ফল (যেমন কিশমিশ, খেজুর)
-
ফলের রস (এমনকি ১০০% প্রাকৃতিক রসও)
-
আখের রস
চিকিৎসকের সতর্কতা
ড. সুধীর কুমার একটি গুরুত্বপূর্ণ ডিসক্লেইমারে বলেন, “এই তথ্যগুলো সাধারণ দৃষ্টিকোণ থেকে দেওয়া হয়েছে। কোন ফল, কতটা খাওয়া যাবে—তা নির্ভর করে ব্যক্তির অসুস্থতা, ওজন, দৈহিক কার্যকলাপ এবং ফলের প্রাপ্যতার ওপর। তাই ব্যক্তিগত পরামর্শের জন্য চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের সঙ্গে কথা বলা উত্তম।”
ইমরান