ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৭ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট দেওয়ার সুপারিশ এনসিপির

প্রকাশিত: ২২:৩৮, ৬ মে ২০২৫

প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট দেওয়ার সুপারিশ এনসিপির

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সংবিধানিক সংস্কারের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের সুযোগ রাখা উচিত।

তিনি বলেন, ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সর্বোচ্চ দুইবার নির্ধারণ এবং দলনেতা, সংসদ সদস্য ও প্রধানমন্ত্রী— এই তিনটি পদ একই ব্যক্তি যাতে না রাখতে পারেন, সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে এনসিপি পক্ষ থেকে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল এবং সংবিধানের ৩৩ অনুচ্ছেদের উপধারা ৩-এ প্রতিরোধমূলক আটক সংক্রান্ত যে বিধান রয়েছে, তা সংস্কার করা।

সারজিস আলম জানান, এই ধারার অপপ্রয়োগের মাধ্যমে বছরের পর বছর মানুষকে আটক রাখা হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই আটক ব্যক্তিরা কিংবা তাদের পরিবার পর্যন্ত জানে না কেন আটক করা হয়েছে।

তিনি বলেন, "আটকের কারণ জানাতে হবে, আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ দিতে হবে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করতে হবে।"

তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন, বিচারপতি নিয়োগে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে মূল্যায়ন এবং মেধা পরীক্ষার মাধ্যমে বিচারপতি নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। বিভাগীয় শহরগুলোতে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনের কথাও তুলে ধরা হয়েছে।

সংসদে বিরোধী দলকে কার্যকর ভূমিকা দিতে ছায়া ক্যাবিনেট গঠনের প্রস্তাব এনসিপি দিয়েছে। এ ছায়া ক্যাবিনেট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ভিত্তিক কাজ করবে। একইসঙ্গে পিএসি (পাবলিক একাউন্টস কমিটি), পরিকল্পনা, জনপ্রশাসন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির নেতৃত্ব বিরোধী দলের হাতে থাকা উচিত বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।

এনসিপি নেতা বলেন, দেশে একটি ফ্যাসিবাদী কাঠামো গড়ে উঠেছে, যার বিলোপ সাধনে কার্যকর ক্ষমতার ভারসাম্য অপরিহার্য। বিচার বিভাগের নিজস্ব প্রশাসনিক সচিবালয় গঠন, বিচারপতি পদোন্নতিতে নিরপেক্ষ মূল্যায়ন এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সম্পর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সারজিস আলম বলেন, সংবিধানে দুদককে একটি স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। তিনি অভিযোগ করেন, পূর্ববর্তী সরকারগুলো বিশেষ করে আওয়ামী লীগ, দুদককে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। বিশেষ করে, দুদক আইনের ৩২ (ক) ধারাটি বাতিলের দাবি জানানো হয়, কারণ এই ধারায় সরকারি ও বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হলে সরকারের পূর্বানুমতি নিতে হয়, যা প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে একটি বড় বাধা সৃষ্টি করে।

ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/p4Q6_kjr97k?si=-HNfzoprMWML--O5

এম.কে.

×