
ছবি: সংগৃহীত
স্বামী-স্ত্রী হ্যালি ও অ্যাডাম ওয়েইডেনবাম নিজেদের সঞ্চয় কাজে লাগিয়ে গড়ে তুলেছেন “এভারহেম” নামের একটি উইন্ডো-কভারিং কোম্পানি, যা আজ একটি মিলিয়ন ডলারের ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।
হ্যালি ওয়েইডেনবাম ২০১১ সালে ইউসিএলএ-এর এক্সটেনশন প্রোগ্রামে ইন্টেরিয়র ডিজাইন শিখে পেশাদার জীবনে প্রবেশ করেন। পরে তিনি যুক্ত হন হোমপলিশ নামে একটি ডিজাইন-ভিত্তিক স্টার্টআপে, যেখানে ছয় বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা তার দৃষ্টিভঙ্গিতে বড় পরিবর্তন আনে।
“তখন জানালার পর্দা বা উইন্ডো ট্রিটমেন্ট ছিল আমার সবচেয়ে কঠিন কাজ,” বলেন হ্যালি। “সঠিক ডিজাইন বাস্তবায়নের মতো ভালো মানের কোম্পানি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তখনই সিদ্ধান্ত নিই, নিজেই কিছু করবো।”
স্বামী অ্যাডাম ছিলেন গ্রাফিক ডিজাইনার ও ফিন্যান্সে অভিজ্ঞ। হ্যালির উদ্যোগে তিনি সাড়া দিয়ে পুরো ব্যবসায়িক কাঠামো তৈরি, ব্র্যান্ডিং ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনা তৈরিতে এগিয়ে আসেন।
‘এভারহেম’: নামেই ভবিষ্যতের দিশা:
নাম বাছাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। সুইডিশ ভাষায় ‘Hem’ মানে ‘বাড়ি’ আর ‘Ever’ যুক্ত করে তা দাঁড়ায় ‘চিরস্থায়ী বাড়ি’। হ্যালি ও অ্যাডাম ‘হাইজ’ বা আরামদায়ক ঘরোয়া পরিবেশের ধারণা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই এ নামটি বেছে নেন।
নিজেদের অর্থেই শুরু, ধাপে ধাপে এগিয়ে যাত্রা:
২০১৯ সালে সঞ্চয় থেকে প্রাথমিক পুঁজি এনে ব্যবসা শুরু করেন তারা। প্রথম দিকে ওয়েবসাইট বানানো ও ইনভেন্টরি কিনতেই খরচ হয় বেশিরভাগ টাকা। তারা চেয়েছিলেন গ্রাহকসেবাকে অনলাইনে উন্নত ও ব্যক্তিগতভাবে সম্পৃক্ত করতে, যা ছিল তাদের মূল পার্থক্য।
অ্যাডাম বলেন, “আমরা জানতাম, বিনিয়োগকারীদের চাপে ব্যবসার মূল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলার ঝুঁকি থাকে। তাই শুরুটা ধীরে-সুস্থে করাটাই ছিল বুদ্ধিমানের কাজ।”
মহামারির সময়ও থেমে থাকেননি:
২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারির সময় সবকিছু স্থবির হয়ে পড়লেও, তারা ৩০%-৩৫% ছাড় দিয়ে অর্ডার গ্রহণ চালিয়ে রাখেন এবং পরে তা সরবরাহ করেন। এর ফলে ব্যবসা আবার গতি পায়।
ইনফ্লুয়েন্সারদের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্গানিক প্রচার ও পরবর্তী সময়ে শুরু হওয়া পেইড মার্কেটিং এভারহেমের প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে। বর্তমানে এটি একটি শক্তিশালী টিমসহ বহুমিলিয়ন ডলারের কোম্পানি।
ভবিষ্যতের লক্ষ্য: জানালা সাজানোর ধারণা বদলানো:
হ্যালি বলেন, “জানালা ট্রিটমেন্ট এখনো অনেকের কাছে গৌণ বিষয়, কিন্তু এটি ইন্টেরিয়র ডিজাইনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ।” তারা চান এটি নিয়ে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনতে।
সম্প্রতি তারা ইনস্টাগ্রাম ইনফ্লুয়েন্সার অ্যানি মেয়ার্স-শ্যায়ার ও শিল্পী কার্লি কুহন-এর সঙ্গে যৌথভাবে নতুন প্রোডাক্ট ও ডিজাইন লঞ্চ করেছেন।
উদ্যোক্তাদের জন্য পরামর্শ: সাহস ও ধৈর্যই মূল চাবিকাঠি
অ্যাডাম বলেন, “দৈনিক বা মাসিক আয় দেখে বিচলিত হবেন না। অর্থনীতি ওঠানামা করে, তাই ধৈর্য ধরুন।”
হ্যালির সংযোজন, “আপনার ভাবনায় বিশ্বাস রাখুন। ঝুঁকি কমিয়ে যেভাবে সম্ভব, কাজটি শুরু করুন। নিজের ওপর সন্দেহ করবেন না।”
সূত্র: https://shorturl.at/nAnKM
মিরাজ খান