
ছবি : সংগৃহীত
৬০ বছর ধরে বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর, ৯৪ বছর বয়সে ওয়ারেন বাফেট অবশেষে পদত্যাগ করলেন। তবে খবরের শিরোনামে শুধুমাত্র তার অবসর নয়, তার জীবনযাপন পদ্ধতিও সমানভাবে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।
বার্ষিক শেয়ারহোল্ডার সভায় বাফেট নিজের খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়ামের প্রতি অনীহার পক্ষে যুক্তি দেন। তিনি বলেন, “৯৪ বছর ধরে আমি যা খুশি খেয়েছি, যা খুশি করেছি, আর যেসব ভবিষ্যদ্বাণী ছিল—সেগুলোর কিছুই ঘটেনি। আমি আর চার্লি (মাঙ্গার) তেমন ব্যায়াম করতাম না। বরং নিজেদের সংরক্ষণ করতাম।”
সেই সভার মঞ্চেই তার সামনে ছিল দুটি কোকাকোলা ও একটি সিস ক্যান্ডির বক্স। বাফেট বলেন, “খারাপ ঘটনাও হয়, তবে সামগ্রিকভাবে জীবন বেশ ভালোই কেটেছে।”
বাফেটের জীবনযাপনের মূলমন্ত্রই যেন ‘সুখ’। তিনি বলেন, “আমি অ্যাকচুয়ারিয়াল টেবিল (জীবন প্রত্যাশার পরিসংখ্যান) দেখেছি—ছয় বছর বয়সীদের মধ্যে মৃত্যুহার সবচেয়ে কম। তাই আমি ঠিক করলাম, ছয় বছরের বাচ্চাদের মতই খাবো।”
তার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় থাকে হটডগ, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, পপকর্ন, কুকি, ক্যান্ডি, আর অন্তত পাঁচ ক্যান কোকাকোলা। দিনভর তিনি রেগুলার কোক আর রাতে চেরি কোক খান। ডেইরি কুইনের আইসক্রিমেও তার বিশেষ আগ্রহ আছে।
প্রতিদিন সকালে ম্যাকডোনাল্ডসে গিয়ে তিনি নাস্তা করেন। তার ডকুমেন্টারি ‘Becoming Warren Buffett’-এ দেখা যায়, বাজার ভাল থাকলে তিনি ব্যাকন, এগ ও চিজ বিস্কুট খান। বাজার খারাপ থাকলে নেন দুটি সসেজ প্যাটি, সেটাও নিজের স্ত্রীর দেওয়া নির্দিষ্ট খুচরা পয়সায় কেনেন।
২০২৩ সালে সিএনবিসি-তে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাফেট বলেন, “যদি কেউ আমাকে বলত যে শুধু ব্রকলি আর নির্দিষ্ট কিছু খেলে আমি এক বছর বেশি বাঁচবো, তাহলে আমি বলতাম—শেষ দিকের এক বছর বাদ দাও, আমাকে বরং আমার পছন্দের খাবার খেতে দাও।”
২০২৪ সালের ডিসেম্বরের Chronicle of Philanthropy-এর একটি প্রতিবেদনে তার মেয়ে স্যুজি বাফেট নিশ্চিত করেন, তার বাবা এখনও সেই ১৯৫৮ সালে কেনা ওমাহার বাড়িতেই থাকেন, যার দাম ছিল মাত্র ৩১,৫০০ ডলার।
শেয়ারহোল্ডার সভায় বাফেট বলেন, “চার্লি আর আমি কখনও ক্রীড়াবিদ হইনি, সেটাই আমাদের লাভ হয়েছে। বেশি ব্যায়াম করলে শরীর ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে—অ্যাথলেটদের দেখলেই বোঝা যায়।”
বাফেটের মতে, দীর্ঘ জীবন, মানসিক স্থিতি, আর পেশাগত সফলতার পেছনে রয়েছে আত্মসন্তুষ্টি আর ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। “আমি খুশি থাকি যখন কোক খাই, হট ফাজ সানডে খাই, বা হটডগ খাই। আমি যেটা উপভোগ করি, সেটাই করি।”
আঁখি