ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৭ মে ২০২৫, ২৪ বৈশাখ ১৪৩২

কাটপিস ভিডিও দিয়ে ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে বিভিন্ন গোষ্ঠী আমাকে টার্গেট করে ধর্মবিদ্বেষী বানানোর প্রচারণা চালাচ্ছে: উমাম ফাতেমা

প্রকাশিত: ০২:০১, ৭ মে ২০২৫; আপডেট: ০২:১৪, ৭ মে ২০২৫

কাটপিস ভিডিও দিয়ে ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে বিভিন্ন গোষ্ঠী আমাকে টার্গেট করে ধর্মবিদ্বেষী বানানোর প্রচারণা চালাচ্ছে: উমাম ফাতেমা

ছবিঃ সংগৃহীত

কাটপিস ভিডিও দিয়ে ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে বিভিন্ন গোষ্ঠী আমাকে টার্গেট করে ধর্মবিদ্বেষী বানানোর প্রচারণা চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা।

বুধবার (০৭ মে) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আজকে আমার উপর নতুন করে অপবাদ টানা হলো। আমি নাকি সমাবেশে বক্তৃতা দেয়ার সময় আলেম ওলামাকে গালি দিয়েছি। প্রসঙ্গত, ভিডিওটা ৯ মার্চের, কার্জন হলের সামনে দোয়েল চত্ত্বরের ভিডিও। আমরা বায়োকেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের ছাত্র-শিক্ষকরা এই মানববন্ধন আয়োজন করি অর্ণবের শাস্তি, শাহবাগ থানা ঘেরাও ও আমাদের জুনিয়রকে মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য করার প্রতিবাদে। আপনারা হয়তো অবগত নাও থাকতে পারেন, শুধুমাত্র শাহবাগ থানা ঘেরাও পর্যন্তই ঐ লোকগুলা ক্ষান্ত থাকেনি। আমাদের জুনিয়র ভিক্টিম মেয়েটির ফোন নং, NID নাম্বার, বাসার ঠিকানা, মা-বাবার তথ্য তারা পাবলিক করে দেয। বিভিন্ন ইন্টার্নাল গ্রুপে ওর ফোন নং ছড়িয়ে থ্রেট কল, ম্যাসেজ দেয়া হয়, ফেসবুকে অনবরত থ্রেট ম্যাসেজ আসতে থাকে। এছাড়াও তারা থানায় এসআইয়ের কাছ থেকে মামলার এজাহার কপি নিয়ে অনলাইনে ছড়িয়ে দেয় যেখানে আমার জুনিয়রের ব্যক্তিগত তথ্যাদি ছিল। এরপর থানার ভিতর থেকে ফেসবুক লাইভে এসে ওকে অশ্রাব্য ভাষায় গালি গালাজ করে, মামলা দেয়ার, মারধর করার হুমকি পর্যন্ত দেয়। যখন রমনা জোনের পুলিশের দায়িত্বরতদের কাছে বিষয়টা অবগত করি, তখন বলা হয় শাহবাগ থানা ঘেরাওকারীদের মধ্যে নিষিদ্ধ সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যরা আছে। আমাদের উপর যে অবিশ্বাস্য নিপীড়নের ফ্লাডগেট এইলোকগুলা খুলে দিয়েছিল তার কোনো শাস্তি কি তারা পেয়েছ?! উল্টা আমার জুনিয়রকে চাপে পড়ে মামলা প্রত্যাহার করতে হলো। আমরা বায়োকেমিস্ট্রির শিক্ষার্থীরা এই ঘটনায় প্রচন্ড ক্ষুদ্ধ ছিলাম। ছাত্র-শিক্ষকরা মানববন্ধন করে প্রতিবাদ করি। শুধু আমরাই না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ ডিপার্টমেন্টে স্টেটমেন্ট দিয়ে এই ঘটনার বিচার দাবি করে। 

আলেম-ওলামাদের গালি দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঘটনার পর ফ্যাক্টচেকার Qadaruddin Shishir তার পোস্টে দেখিয়েছিলেন থানা ঘেরাওকারীরা কোনো স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেখানে আসেনি। বরং নির্দিষ্ট কিছু নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য। এমনকি ৭ মার্চ অর্ণব নামক হেনস্থাকারী কালের কণ্ঠে দেয়া বক্তব্যে তার বিকৃতমস্তিষ্কের রূপ পরিষ্কার করে। এটার পরও আমাকে টেনে নামানোর জন্য যারা এই নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনের সদস্য ও শাহবাগ ঘেরাওকারীদের আলেম-ওলামার সমমর্যাদার বানাচ্ছে তারা কি ইসলাম ও আলেমদের অবমাননা করছে না?! যারা হেনস্থাকারী অর্ণবকে কোর্টের সামনে মাথায় পাগড়ি, গলায় গাদাফুলের মালা আর হাতে কোরআন শরীফ দিয়ে বরণ করছিল সেদিন কি কোরআন শরীফ অবমাননা হয়নি?! 

আমি চেক করে দেখলাম, যে ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল হ্যারেসমেন্টের ঘটনাকে জাতীয় ঘটনায় পরিণত করার মূল কারিগর সেই ব্যক্তিই আমার বক্তব্য কাটপিস ভিডিও করে উপর ক্যাপশন দিয়ে আমাকে 'ধর্মবিদ্বেষী', 'পুরুষবিদ্বেষী' বানাতে উঠে পড়ে লেগেছে। কাটপিস ভিডিও দিয়ে ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে বিভিন্ন গোষ্ঠী আমাকে টার্গেট করে ধর্মবিদ্বেষী বানানোর প্রচারণা চালাচ্ছে। 
এর বাইরে Jamuna Television এর আমার একটি ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা, হেফাজত ইসলাম নারী জাতির বিরুদ্ধে। কিন্তু ভিতরে ভিডিওতে আমি ভিন্ন কথা বলেছি। তবুও বলতে হয়, এই ধরনের ফতোয়া দেয়ার আমি কেও নই। কোনো গোষ্ঠীকে শত্রুগণ্য করা আমার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য না। এ ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কোটেশন জনপরিসরে ভুল ম্যাসেজ ছড়ায়।

পরিশেষে তিনি বলেন, আজকে হেফাজতে ইসলামের দুঃখপ্রকাশ করে দেয়া বিবৃতিকে সাধুবাদ জানাই। তাদের মহাসমাবেশের মঞ্চ থেকে নারীদের গালি দেয়ার প্রসঙ্গে দুঃখপ্রকাশ রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়।  শাপলা-শাহবাগ বাইনারির ফাঁদে পড়ে দেশটা বিভাজিত করার পরিবর্তে সকল মতানৈক্য টেবিলে সমাধান করার আহ্বান জানাই। আর হেফাজতের বিরুদ্ধে আওয়ামী আমলে হওয়া ২১৩টা মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া এরমধ্যে শুরু হয়েছে। আশা করি, হেফাজত ইসলাম ৫ আগস্ট পরবর্তীতে নারী অধিকারের প্রশ্নকে ধারণ করতে সক্ষম হবে ও হেফাজতের ১২ দফা দাবিতে থাকা আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের মতো গুরুত্বপূর্ণ দাবিগুলো রাজনৈতিক ঐক্যের সূচনা ঘটাবে।

পোস্ট লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/share/p/1ASfPiuZ8Z/

ইমরান

আরো পড়ুন  

×