
ছবি: সংগৃহীত
সাবেক ছাত্রনেতা ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক মোশাররফ আহমেদ ঠাকুর সম্প্রতি একটি টেলিভিশন টকশোতে অংশ নিয়ে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কেন্দ্র করে নানা প্রশ্ন তোলেন। তিনি দাবি করেন, ড. ইউনূসের সাম্প্রতিক বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে, যা দেশ ও জাতির জন্য ক্ষতিকর।
টকশোতে মোশাররফ বলেন, “ড. ইউনূস একদিকে বলছেন আগামী জানুয়ারিতে নির্বাচন হবে, আরেকদিকে তাঁর প্রেস সেক্রেটারি বলছেন নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে হতে পারে— এ ধরনের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য আমাদের মনে সন্দেহ জাগায়, তিনি কি মতিভ্রমে ভুগছেন না স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে পড়েছেন? বিষয়টি খতিয়ে দেখা জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “আমি এই প্রেস সেক্রেটারির বক্তব্যকে বিশ্বাস করি না। এভাবে দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করা মোটেই কাম্য নয়। যখনই সরকার বিদেশিদের মাধ্যমে জনগণের উদ্দেশে বার্তা পাঠাতে চায়, তখনই বোঝা যায় সরকার সংকটে রয়েছে।”
জাতিসংঘ মহাসচিবের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন মোশাররফ। তিনি বলেন, “যখন জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন ড. ইউনূস দ্বিতীয় নোবেল পুরস্কার পেতে পারেন কি না, তা বিবেচনা করা হচ্ছে— তখনই সন্দেহ হয়, এর পেছনে কোনো সুপরিকল্পিত কুমতলব লুকিয়ে আছে। আমি আমার রাজনৈতিক নেতৃত্বকেও জানিয়েছি, এখানে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের আভাস রয়েছে।”
রোহিঙ্গা ইস্যুতে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফিরে যাবে। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, নতুন করে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তাহলে যাদের ফেরত যাওয়ার কথা ছিল, তারা কোথায় গেল? মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।”
এ ছাড়া, ড. ইউনূসের জাতিসংঘ মহাসচিবকে পাঞ্জাবি পরিয়ে দেওয়ার ঘটনাও সমালোচনার মুখে পড়ে। এ নিয়ে মোশাররফ বলেন, “সবাই যখন স্যুট পরে উপস্থিত হন, তখন ড. ইউনূস মহাসচিবকে পাঞ্জাবি পরিয়ে দেন। এমন ঘটনাগুলো দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চলছে।”
মোশাররফ আহমেদ ঠাকুর করিডোর ইস্যুতে গভীর আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “এই করিডোর মানবিক করিডোর নয়, এটা একটি ষড়যন্ত্রের করিডোর। ইতিহাসে দেখা গেছে, ইরাক বা ইউক্রেনেও এ ধরনের করিডোর স্থাপন করা হয়েছিল— যার পরিণতি ওই দেশগুলোর জন্য ছিল ভয়াবহ। বাংলাদেশকেও সেই পথে নেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে।”
তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, “প্রত্যেকটি সচেতন নাগরিককে এখন সোচ্চার হতে হবে। আমাদের বলতে হবে— এই ষড়যন্ত্রের করিডোর আমরা হতে দেব না। এটি মানবিকতার আড়ালে একটি রাজনৈতিক ফাঁদ। ড. ইউনূস যদি দেশের কল্যাণ চান, তাহলে তাঁকে স্পষ্ট করে বলতে হবে— তিনি বাংলাদেশকে ফিলিস্তিন বানাতে চান না, তিনি দেশের ভেতরে আরেকটি ‘ইসরায়েল’ সৃষ্টির পক্ষে নন।”
মোশাররফ আহমেদ ঠাকুর বলেন, “ড. ইউনূস যদি দ্বিতীয় নোবেল পুরস্কার অর্জন করতে চান, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। তিনি চাইলে হিলারি ক্লিনটন কিংবা ক্লিনটন ফাউন্ডেশন বা গ্রামীণের সহায়তায় সেটা পেতে পারেন। তবে দেশের ভাগ্য নিয়ে কোনো আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হওয়া তাঁকে মানায় না।”
ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=abrEN8I1Gu4
এম.কে.