ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

 বরফে জমে যাওয়া হ্রদ, তবুও প্রাণে ভরা লেক বায়কালের অজানা কাহিনি

প্রকাশিত: ২৩:১৩, ১৬ জুলাই ২০২৫

 বরফে জমে যাওয়া হ্রদ, তবুও প্রাণে ভরা লেক বায়কালের অজানা কাহিনি

সংগৃহীত

সাইবেরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত রাশিয়ার লেক বায়কাল (Lake Baikal) শুধু পৃথিবীর গভীরতম হ্রদ নয়, এটি পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন ও রহস্যময় প্রাকৃতিক জলাধার হিসেবেও পরিচিত।

লেক বায়কাল সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:

  • গভীরতা: প্রায় ১,৬৪২ মিটার বা ৫,৩৮৭ ফুট
  • আয়তন: প্রায় ৩১,৭২২ বর্গকিমি 
  • বিশ্বের মোট মিঠাপানির ২০ শতাংশ একা এই হ্রদে সংরক্ষিত
  •  প্রায় ২৫-৩০ মিলিয়ন বছর পুরোনো, পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন হ্রদ
  • ১৫০০ টির বেশি প্রাণী ও উদ্ভিদের প্রজাতি, যাদের ৮০% শুধু এখানেই পাওয়া যায়

লেক বায়কালকে শুধু একটি হ্রদ হিসেবে দেখলে ভুল হবে। এটি একটি টেকটোনিক রিফট লেক, অর্থাৎ দুইটি ভূত্বকের প্লেটের বিচ্ছিন্নতার ফলে গঠিত গভীর গর্তে জল জমে তৈরি হয়েছে। এটি এখনো বছরে প্রায় ২ সেন্টিমিটার করে প্রসারিত হচ্ছে।

UNESCO ১৯৯৬ সালে লেক বায়কালকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করে। কারণ, এটি পরিবেশগত, বৈজ্ঞানিক ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে এক অনন্য নিদর্শন।

লেক বায়কালের তলদেশে নিউট্রিনো ডিটেকশন এর জন্য টেলিস্কোপ বসানো হয়েছে, যা মহাকাশ থেকে আসা অতিক্ষুদ্র কণা বিশ্লেষণে ব্যবহৃত হচ্ছে। ভূবিজ্ঞান, জলবায়ু পরিবর্তন ও জৈব গবেষণায় এখানকার তথ্য বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীদের জন্য অমূল্য।

যদিও লেক বায়কাল এক অপরূপ প্রাকৃতিক বিস্ময়, তবে এটি এখন দূষণ, অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে। রাশিয়ার সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো একত্রে হ্রদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় কাজ করছে।

লেক বায়কাল আমাদের জন্য শুধু এক সৌন্দর্য নয়, এটি জলবিজ্ঞান, পরিবেশ রক্ষা ও প্রাণীজগত রক্ষার এক দুর্লভ গবেষণাগার। এর গভীরতা যেমন বিস্ময়কর, তেমনি গভীর এই হ্রদের প্রতিটি বিন্দুতে লুকিয়ে আছে প্রকৃতির এক অপরূপ ইতিহাস।

হ্যাপী

×