
গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ করা হচ্ছে
২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতিচিহ্ন, শহীদদের স্মারক ও আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়নের ঘটনা তুলে ধরার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন অর্থাৎ গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ করা হচ্ছে। আগামী ৫ আগস্টের মধ্যে জাদুঘরের রূপান্তরের কার্যক্রম সমাপ্ত করতে যে ধরনের নির্মাণ বা সংস্কারকাজ করতে হবে, সেই কাজ হবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে, অর্থাৎ দরপত্র ডাকা হবে না।
মঙ্গলবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এতে মোট ব্যয় হবে ১১১ কোটি ১৯ লাখ ৮১ হাজার টাকা।
জানা গেছে, জাদুঘরের কাজের মধ্যে থাকবে ইএম অংশ। ইএম বলতে বৈদ্যুতিক ও যান্ত্রিক অংশকে বোঝানো হচ্ছে। এর মধ্যে থাকবে বৈদ্যুতিক তার, সুইচসহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিক ও যান্ত্রিক সামগ্রী। আরও থাকবে পূর্ত অংশ। এর মধ্যে থাকবে বৈদ্যুতিক-যান্ত্রিক অংশ বাদে বাকি সব। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে’ রূপান্তরের সিদ্ধান্ত গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অনুমোদিত হয়। আগামী ৫ আগস্ট এ জাদুঘরের উদ্বোধন করা হতে পারে।
শুভ্রা ট্রেডার্সকে দিয়ে জাদুঘরের ইএম অংশের কাজ করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের গণপূর্ত বিভাগ। এর জন্য ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪০ কোটি ৮৩ টাকা। এ ছাড়া পূর্ত অংশের কাজ করবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দি সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড। সে জন্য ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৭০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের আরও বলেন, অসংলগ্নতা থাকার কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট (আইপিপি) সংক্রান্ত হওয়া চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করা হবে। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গত সরকারের সময় আইপিপি সংক্রান্ত কিছু চুক্তি হয়েছিল। এতে অনেক অসংলগ্নতা ছিল। তাই সেগুলো পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, এখানে অনেক বিদেশি কোম্পানি আছে। তাদের চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করার জন্য হাইকোর্ট থেকে নির্দেশনা আছে। সে জন্য আলাপ-আলোচনা করে এটা করা হবে। সে জন্য আইনি সহায়তা দরকার। সেটা করার জন্য প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। সেখানে আইনি বিষয় আছে; একতরফা কিছু করা যাবে না।
এদিকে, দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আগস্ট মাসের জন্য এক কার্গো এলএনজি আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কাতার থেকে এই এলএনজি আনতে ব্যয় হবে ৫৫৬ কোটি ৭৬ লাখ ৫০ হাজার ৯০৬ টাকা। সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে ১ কার্গো (৪-৫ আগস্ট ২০২৫ সময়ে ৩৩তম) এলএনজি আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি কমিটি। জানা গেছে, পেট্রোবাংলা কর্তৃক ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে।
দাখিল করা ৩টি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সর্বনি¤œ দরদাতা প্রতিষ্ঠান কাতার এনার্জি ট্রেডিং এলএলসি, কাতার থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতি এমএমবিটিইউ ১৩.২৪ মার্কিন ডলার হিসেবে এক কার্গো বা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হবে ৫৫৬ কোটি ৭৬ লাখ ৫০ হাজার ৯০৬ টাকা।