ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চলমান অভ্যন্তরীণ উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এবার আরও আটজন কর কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মতো ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণে জড়িত থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (তারিখ) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) এ–সংক্রান্ত পৃথক আদেশ জারি করে। আদেশে বলা হয়, গত ২২ জুন জারি করা বদলির আদেশ অবজ্ঞা করে তা ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় বিভাগীয় তদন্তের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাময়িক বরখাস্তকৃতদের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে এবং বরখাস্তকালীন সময়ে তারা বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন।
বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন:
১. মাসুমা খাতুন – যুগ্ম কর কমিশনার, ঢাকা কর অঞ্চল–২
২. মুরাদ আহমেদ – যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল–১৫
৩. মোরশেদ উদ্দীন খান – কুষ্টিয়া কর অঞ্চল
৪. মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা – যুগ্ম কর কমিশনার, নোয়াখালী কর অঞ্চল
৫. আশরাফুল আলম প্রধান – যুগ্ম কর কমিশনার, কক্সবাজার কর অঞ্চল
৬. শিহাবুল ইসলাম – উপকর কমিশনার, খুলনা কর অঞ্চল
৭. নুশরাত জাহান – উপকর কমিশনার, রংপুর কর অঞ্চল
৮. ইমাম তৌহিদ হাসান – উপকর কমিশনার, কুমিল্লা কর অঞ্চল
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, এ কর্মকর্তারা *গত মাসে রাজস্ব খাতে যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে হওয়া আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন, কেউ কেউ আন্দোলনের নেতৃত্বও দিয়েছেন।
### আন্দোলনের পটভূমি ও পরবর্তী পদক্ষেপ
গত জুনে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যৌক্তিক সংস্কার ও দাবিদাওয়া বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আন্দোলনে নামেন। ২৮ ও ২৯ জুন দেশজুড়ে কাজ বন্ধ রাখা হয়, যা রাজস্ব সংগ্রহে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। পরে ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন আংশিক প্রত্যাহার করা হয়।
আন্দোলন থেমে গেলেও সরকার শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দায়িত্বহীনতার দায়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা* গ্রহণ শুরু করে। এর অংশ হিসেবে:
* একজন কমিশনার ও তিনজন সদস্যকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।
* চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তৎকালীন কমিশনারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
* দুদক ইতোমধ্যে এনবিআরের দুজন সদস্যসহ মোট ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। তাঁদের বেশিরভাগই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
এই সাময়িক বরখাস্তের আদেশে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান স্বাক্ষর করেছেন।
ছামিয়া
