ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১২ মাঘ ১৪৩১

অনলাইনেও টিকিট মিলবে 

গণঅভ্যুত্থানের থিমে সাজানো হচ্ছে বাণিজ্যমেলা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

গণঅভ্যুত্থানের থিমে সাজানো হচ্ছে বাণিজ্যমেলা

.

আগামী ১ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা ২০২৫। চতুর্থবারের মতো রাজধানীর পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) বাণিজ্যমেলা স্থায়ী ভবনে আয়োজন করা হচ্ছে। প্রতিবছরই বাণিজ্যমেলায় নতুন কিছু সংযোজন করা হয়েছে। এবার গত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগকে সামনে রেখে মেলা সাজানো হচ্ছে। মেলার মূল আকর্ষণ প্রবেশ গেটে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের থিম থাকবে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ও বাণিজ্যমেলার পরিচালক বিবেক সরকার বলেন, আগামী ০১ জানুয়ারি থেকে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা শুরু হবে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সকাল ১০টায় মেলা প্রাঙ্গণে সশরীরে উপস্থিত থেকে মেলা উদ্বোধন করবেন বলে সম্মতি দিয়েছেন। প্রতিবছরই বাণিজ্যমেলায় নতুন কিছু সংযোজন করা হয়েছে। এবার আমরা গত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার যে আত্মত্যাগ সেটা সামনে রেখে মেলা সাজানো হয়েছে।
মেলায় শহীদের সম্মান জানাতে শহীদ আবু সাঈদ কর্নার ও মীর মুগ্ধ কর্নার নামে দুইটি কর্নার থাকবে। একইসঙ্গে যুবকদের জন্য একটি যুবক (ইয়ুথ) প্যাভিলিয়ন থাকবে। এ ছাড়া সিনিয়র সিটিজেনদের বসার জন্য একটি জায়গা রাখা হবে, সেখানে শুধু বয়স্করা বসতে পারবেন। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য একটু কম দামে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হবে। যেখানে তুলনামূলক কম দামে তারা পণ্য বিক্রি করতে পারবেন।
মেলার সবচেয়ে বড় আকর্ষণের জায়গা হলো প্রবেশ দার সেখানেও গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে এসে নতুন কিছু করা হবে জানিয়ে বাণিজ্যমেলার পরিচালক বিবেক সরকার বলেন, এ বছর মেলার প্রবেশদ্বারে ভিন্নতা আনা হয়েছে। প্রবেশ গেটে থাকছে জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের থিম। এ ছাড়া পুরো মেলা প্রাঙ্গণে আমাদের ইপিবির কর্মকা- তুলে ধরাসহ আর্থিক খাতের নানা বিষয় তুলে ধরা হবে। আমাদের আশা দর্শনার্থীরা এ বছর মেলার অন্যরকম অনুভূতি পাবে।
এ বছর প্রথম মেলার টিকিট অনলাইনে পাওয়া যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা হয়েছে। ই-টিকিটিং হলে দর্শনার্থীরা মোবাইলে কিউআর কোড দেখিয়ে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। ফলে দর্শনার্থী যেখান থেকে খুশি অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট ক্রয় করতে পারবেন। এতে প্রবেশে অতিরিক্ত ভিড় এড়ানো যাবে। দর্শনার্থীদের সময় বাঁচবে। একই সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট কিনতে পারবেন দর্শনার্থীরা। এ ছাড়া বিআরটিসি বাস কাউন্টার থেকেও টিকিট যাতে করতে পারে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। গতবছরের মতো এবছরও মেলায় প্রবেশ মূল্য প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৫০ টাকা, আর অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২৫ টাকা থাকছে।
তিনি বলেন, মেলায় দেশী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের একাধিক প্রতিষ্ঠান মেলায় তাদের পসরা নিয়ে হাজির হবে। এ বছর ৭ থেকে ৮টি দেশ অংশ নিচ্ছে। এরমধ্যে ভারত, পাকিস্তান, ইরান, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, হংকং, সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নেবে। এসব দেশ ১৩ থেকে ১৪টি স্টলে তাদের পণ্য প্রদর্শন করবে পাশাপাশি দেশীয় পণ্য রপ্তানির বড় বাজার খোঁজার লক্ষ্য রয়েছে।
মেলার পরিচালক বলেন, এ বছর হলের ভেতরে ও সামনের ফাঁকা জায়গা মিলে ৩৫০ স্টল থাকবে মেলায়। আমাদের প্রায় ৯০ শতাংশ স্টল বরাদ্দ হয়ে গেছে। বাকিগুলোর জন্য রিটেন্ডার করা হবে। আশা করছি এ সপ্তাহের মধ্যে বরাদ্দ হয়ে যাবে। এবারই প্রথম অনলাইনে টেন্ডার করা হয়েছে। এ বছরও গতবছরের মতো প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন থাকবে ১০০টি, বিদেশী প্যাভিলিয়ন ১৫টি, জেনারেল স্টল, ফুডকোর্ট, মিনি স্টল, প্রিমিয়ার স্টল প্রায় ১৭০টি এবং ইউটিলিটি বুথ রাখা হয়েছে ৩০টি। এ ছাড়া  এখন পর্যন্ত মেলায় তিনটি ব্যাংকের এটিএম বুথ থাকবে। এরমধ্যে ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক এবং ট্যাক্স ভ্যাটের সংরক্ষণের জন্য সোনালী ব্যাংকের একটি বুথ থাকবে। এতে করে রাজস্ব আদায় ভালো হবে। ইসলামী ব্যাংকসহ তিনটি ব্যাংকের বুথ স্থাপন হয়েছে। পাশাপাশি হলের ভেতরে নিজস্ব একটা ক্যাফেটরিয়া রয়েছে এক সঙ্গে ৫০০ মানুষ বসে খাবার খেতে পারবে। এ ছাড়া আরও ১২-১৫টি ফুড স্টল থাকবে।
দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য বরাবরের ন্যায় এবারও বিআরটিসি বাস রাখা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, দর্শনার্থীদের জন্য থাকছে বাস সার্ভিস। কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচ থেকে মেলা পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিআরটিসি বাস চলাচল করবে। 

জোবায়ের আহমেদ

×