অভাবকে কখনই অজুহাত হিসাবে সামনে আনেননি তিনি।
ইউপিসিএস সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষা হলো ভারতের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা। প্রতি বছর লক্ষাধিক পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিলেও মাত্র হাতে গোনা কয়েকজন কঠিন এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেন। আজ এমন একজনের সাফল্যের কাহিনী আপনাদের সামনে তুলে ধরব যিনি কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে থেকে হাল না ছেড়ে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। জীবনে বড় কিছু অর্জন করার জন্য প্রাণপাত করেছেন। অভাবকে কখনই অজুহাত হিসাবে সামনে আনেননি তিনি।
‘আইএএস অফিসার শ্রীনাথ কে’ আজ সমাজের সকলের কাছেই অনুপ্রেরণার আরেক নাম। অধ্যবসায় কীভাবে যেকোনো চ্যালেঞ্জকে অতিক্রম করতে পারে তা তিনি প্রমাণ করে দেখিয়েছেন। পেটের তাগিদে একটা সময় তিনি স্টেশনে কুলির কাজ করতেন। তবে তার মধ্যেও তিনি আইএএস অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। তাই তিনি ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে স্টেশনের ফ্রি ওয়াই-ফাইকে কাজে লাগিয়ে পড়াশুনা করতেন। না কোন পরীক্ষার প্রস্তুতি, না কোন কোচিং ইনস্টিটিউট। যখনই অবসর সময় পেতেন তখনই তিনি নিজেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে পড়াশুনা করতেন।
অবশেষে দৃঢ় সংকল্পেই লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সকলকে চমকে দেন তিনি। আপনি যদি আপনার লক্ষ্যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং নিবেদিত হন তবে আপনার পক্ষে কিছুই অসম্ভব নয়। তাই অনেকই আজ তাকেই তাদের রোল মডেল হিসাবেও দেখেন।
শ্রীনাথ প্রমাণ করেছেন যে সফল হতে যা লাগে তা হলো জেদ আর ধৈর্য্য। ভাগ্যের উপর নির্ভর করার পরিবর্তে, তিনি যতটুকু পেয়েছেন সবটুকুকেই নিজের লক্ষ্য অর্জনে কাজে লাগিয়েছেন। এর্নাকুলাম রেল স্টেশনে একজন কুলি কীভাবে আইএএস হয়ে নজির গড়লেন এই গল্প অনেকেই আরও একবার অনুপ্রাণিত করবে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হওয়ায় তিনি ছিলেন পরিশ্রমী। দিনে দুই শিফটে কাজ করে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করতেন তিনি।
জীবনে বড় কিছু করার জন্য, শ্রীনাথ প্রথমে কেরল পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হন এবং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরে তিনি একজন পিসিএস অফিসার হন। কিন্তু এতেই থেমে না থেকে ইউপিএসসি- এর জন্য পড়াশোনা চালিয়ে যান। রেলের বিনামূল্যের ওয়াই-ফাই এবং হাতে থাকা একটি স্মার্টফোন এই ছিল তার সাফল্যের অন্যতম হাতিয়ার। চতুর্থ প্রচেষ্টায় ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে একজন আইএএস অফিসার হন শ্রীনাথ। তার কঠিন পরিশ্রম আজ লাখো মানুষের অনুপ্রেরণা।
এম হাসান