ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টাঙ্গাইলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

প্রকাশিত: ১৭:১৮, ১৩ আগস্ট ২০২০

টাঙ্গাইলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ টাঙ্গাইলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরো উন্নতি হয়েছে। তবে জেলায় এখনো ২টি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমলেও বানভাসী মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। এখনো মানুষ উঁচু কিংবা খোলা স্থানে অবস্থান নিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ। পানি কমতে থাকায় কিছু কিছু স্থানে ভাঙ্গনও দেখা দিয়েছে। বন্যায় জেলায় ৬ লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলা ত্রাণ শাখার তথ্য অনুয়ায়ী বর্তমানে পানিবন্দি কোন লোক সংখ্যা নেই। বন্যায় এখন পর্যন্ত ১৮ হাজার হেক্টর ফসলী জমি নিমজ্জিত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্র জানায়, জেলায় ১২টি উপজেলার মধ্যে ১১টি উপজেলার নিমাঞ্চল এবং চরাঞ্চল প্লাবিত হয়। বন্যা কবলিত উপজেলাগুলো হলো- টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর, দেলদুয়ার, ভূঞাপুর, কালিহাতী, ধনবাড়ী, গোপালপুর, বাসাইল, মির্জাপুর, সখীপুর এবং ঘাটাইল। এই ১১ উপজেলার ৯৫টি ইউনিয়নের অন্তত ৮৪৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়। অপরদিকে ৬টি পৌরসভার আংশিক এলাকা প্লাবিত হয়। বন্যায় ৬ লাখ ১৩ হাজার ২২৭ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে পানিবন্দি অবস্থায় কোন পরিবারের বা লোক সংখ্যা নেই। অপরদিকে ৭৯০টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে এবং আরো আংশিক ৩৫ হাজার ৯৮৯টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও ২টি স্কুল নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আংশিক আরো ৩১৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সূত্রটি আরো জানায়, এছাড়া নদী ভাঙ্গনে ১টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত এবং আংশিক ২৩০টি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ১১ উপজেলার ৮০৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলায় এখন পর্যন্ত ১৩ কি.মি. সম্পূর্ণ কাঁচা রাস্তা এবং আংশিক ৭৯৫ কি.মি. কাঁচা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অপরদিকে সম্পূর্ণ ১ কি.মি. পাকা রাস্তা এবং ১৮৬ কি.মি. আংশিক রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও সম্পূর্ণ ২৬টি ব্রিজ এবং আংশিক ১৭৮টি ব্রিজ ক্ষতি হয়েছে। সম্পূর্ণ ১.৮ কি.মি. এবং ১৩ কি.মি. আংশিক নদীর বাঁধ ক্ষতি হয়। অন্যদিকে ৯৪৩৫টি টিউওবেল ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে ৫টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। এই আশ্রয় কেন্দ্রের লোক সংখ্যা ১৯০জন। ৪টি গবাদি পশুও আশ্রয় নেয়। ১১৩টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এদিকে বন্যার পানিতে ডুবে এখন পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে শিশুসহ ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, তৃতীয় দফা বন্যায় ১৮ হাজার ১২৬ হেক্টর ফসলী জমি নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে বোনা আমন, রোপা আমন (বীজতলা), আউশ, সবজি, লেবু এবং আখ রয়েছে। এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন নদীর পানি কমা অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরো উন্নতি হয়েছে। পানি সরে গেলে নদী ভাঙ্গন তীব্র হবে বলে তিনি জানান।
×