ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতীয় পণ্যে সয়লাব যশোরের বড়বাজার

প্রকাশিত: ০৮:৫১, ২৪ মে ২০১৯

 ভারতীয় পণ্যে সয়লাব  যশোরের বড়বাজার

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ ঈদকে সামনে রেখে যশোর শহরের বড়বাজারে চোরাই পথে আসা ভারতীয় পণ্যে সয়লাব হয়ে গেছে। এই চোরাই পণ্য অবাধে বিক্রি হলেও স্থানীয় প্রশাসন রয়েছে নীরব। সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় সহজে চোরাকারবারিরা ভারত সীমান্ত পার করে যশোরের বাজারে এসব পণ্য আনছে। অভিযোগ রয়েছে, ভারতীয় ওইসব পণ্য নিম্নমানের। কিন্তু ক্রেতাদের ভুল বুঝিয়ে বিক্রেতারা দাম হাকাচ্ছেনও বেশি। এ কারণে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা। এ অবৈধ পণ্যদ্রব্য বেচাকেনা যদি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারে তাহলে দেশীয় পণ্য হুমকির মুখে পড়বে বলে ধারণা করছে সংশ্লিষ্টরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যে সমস্ত পণ্য সামগ্রী চোরাই পথে যশোরে নিয়ে আসছে তার মধ্যে রয়েছে থ্রি-পিস, শাড়ি, জিন্স প্যান্ট, শার্ট, পাঞ্জাবি, গেঞ্জি, ইমিটেশনের গহনা, বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রী-পারফিউম, ফ্রেসওয়াশ, মুখ ফর্সা করার ক্রিম, সাবান, জিরা-মশলা, সেন্ট, পটকা বাজি, গুঁড়া দুধসহ, বিভিন্ন সামগ্রী। অবৈধপথে আনা এসব ভারতীয় পণ্য লাখ লাখ টাকার রমরমা বাণিজ্য চলছে। ঈদকে সামনে রেখে বড়বাজারে অধিকাংশ কসমেটিকসের দোকানে প্রতিদিন এ চিত্র চোখে পড়ছে হরহামেশা। ভারতীয় অবৈধ পণ্যের কারণে দেশীয় কসমেটিকস ও অন্য পণ্য বিক্রেতাদের মাথায় হাত ওঠার উপক্রম হয়েছে। এ সকল ব্যবসায়ীর অভিযোগ, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার লোকজনকে ম্যানেজ করে কয়েকটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ভারতীয় অবৈধ পণ্য প্রবেশ করছে। নাম না প্রকাশে ইচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, যশোরের খুব কাছে ভারতীয় সীমান্ত। বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় প্রসাধনী সামগ্রী ও কসমেটিকস আসছে সবচেয়ে বেশি। বেনাপোলের সাদিপুর, পুটখালী, অগ্রভুলোট, রুদ্রপুর, গোগা ও দৌলতপুরসহ বিভিন্ন সীমান্ত পথে এসব পণ্য আনা হচ্ছে। এছাড়া সাতক্ষীরা জেলা থেকেও আসছে এ সকল অবৈধ পণ্য। কিছু নারী ও অল্প বয়স্ক ছেলে/মেয়েরা এ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। প্রতিদিনই যশোর থেকে বেনাপোলে পণ্য আনতে যায় এ সকল চক্রের সদস্যরা। সীমান্ত থেকে বিভিন্ন পণ্য ও প্রসাধনী সামগ্রী নিয়ে ট্রেনে করে যশোরে আসে। ট্রেন কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ সদস্যকে টাকা দিয়ে নিরাপদে যশোরের বাজারে সরবরাহ করছে এসব ভারতীয় পণ্য। শুধু চোরাচালানীরা নয়, পাসপোর্টধারী অনেক মহিলা-পুরুষ ভারতীয় পণ্যের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। এরা ছোট লাগেজ পার্টি নামে পরিচিত। এসব লাগেজ পার্টিকেও ঘাটে ঘাটে বিভিন্ন সংস্থাকে খুশি করতে টাকা দিতে হয়। যশোর বড়বাজার এলাকার একাধিক সূত্রে জানা গেছে, রমজান মাসের আগে থেকেই অনেক ব্যবসায়ী বাজার ধরার জন্য ভারতীয় পণ্য মজুদ করে রেখেছেন। মূলত বাজারের অধিকাংশ কসমেটিকস ব্যবসায়ী ভারতীয় পণ্যের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তাদেরই একটি অংশ চোরাচালানী ও লাগেজ পার্টির কাছ থেকে প্রসাধনী সামগ্রী সংগ্রহ করে রেখেছেন। বড়বাজারে ঈদের শপিং করতে আসা কল্পনা আক্তার জানান, বাজারে ভারতীয় প্রসাধনী নামে যা আছে বেশিরভাগই নকল ও নিম্নমানের। কিন্তু ক্রেতাদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে বেশি দাম। প্রশাসনকে নিয়মিত মনিটরিং করে এগুলো বাজার থেকে অপসারণ করতে হবে। এর ফলে দেশীয় পণ্যের প্রতি ক্রেতারা আকৃষ্ট হবে। যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আনছার উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোন অভিযোগ নেই। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখব।
×