ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কবি ফজল শাহাবুদ্দীনের প্রয়াণ দিবসে

কবির বোতাম

প্রকাশিত: ০৭:৪০, ২৩ মার্চ ২০১৮

কবির বোতাম

শাহীন রেজা তোমার ঢিলেঢালা কোর্তার ছিঁড়ে যাওয়া বোতামটার জন্য আমি কিনে এনেছি কিছু রঙিন সুতা আর মিহিন একটা সুঁই। কিন্তু তাতে সুতা গাঁথতে গাঁথতে উধাও হলো রোদ। মাঘের বিষণœতায় আমি হতাশ হতে হতে তাকালাম গোধূলির দিকে। অসতর্ক সুন্দরের কি নিবিড় পাহারা আততায়ী সূর্যাস্তের জন্য। আমি তোমাকে খুঁজতে থাকলাম। দৈনিক বাংলা থেকে বাসাবো তারপর বনানী, কোথাও তুমি নেই। নেই তোমার কোর্তা, নেই হারুন ডায়েরির সেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষও। নেই মাহবুব তালুকদার, আল মুজাহিদী, জাহিদুল হক। ডানে অপার শূন্যতা, বামেও। সামনে জাহাঙ্গীর ফিরোজ, পেছনে জাকির আবু জাফর আর তোমার শূন্যতা স্পর্শ করে একদম পাশাপাশি কাছাকাছি আমি। নায়ক হারুন খুঁজছেন, জয়নাল দরজা ঠেলে ঢুকছে বার বার। টেলিফোনে অপেক্ষা করছেন সম্পাদক তোয়াব খান; তোমার একান্ত স্বজন। কিন্তু তুমি কোথায়? কবিকণ্ঠ নিয়ে প্রেসে ব্যস্ত আমিনুর রহমান টুটুল, অসুস্থ শয্যা থেকে বার বার ডাক পাঠাচ্ছেন সজল আরেফিন। কি উত্তর দেব আমি, কিভাবে জানাব আমার অসহায়ত্বের কথা। তোমার বোতাম হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি আমি। আমার পেছনে ফাহিম ফিরোজ, শাকিল রিয়াজ, পারভেজ আনোয়ার, সানজীদ নিশান, জামালউদ্দীন বারী, তৌফিক জহুর, শান্তা মারিয়া, জামসেদ ওয়াজেদ। আমাদের প্রতিটি দৃষ্টি মৃত্যুহীনতার দিকে, প্রতিটি প্রত্যাশা তেত্রিশ লক্ষতম জন্মদিনের। তুমি আসবে, তোমার পদশব্দে জেগে উঠবে নগরীর ঘুম, শালিকের চোখজুড়ে আঁকা হবে শব্দবিভা, আর অর্šÍগত হাহাকারে মূহ্যমান কবি হৃদয়ে ফুটে উঠবে অনন্ত শেফালীর সৌরভ। তোমার বোতাম হাতে দাঁড়িয়ে আছি আমি, তুমি আসবেই। প্রতীক্ষায় সময় বয়ে যাক। চৈতন্যের দীপাবলী ছড়াবেই তার দীপ্ত আলোঘ্রাণ।
×