ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

‎হেমিলির না বলা কথা

ফারজানা ইয়াসমিন রিতু, ‎ দশম শ্রেণি, মমতাজ মোস্তফা আইডিয়াল স্কুল, ভাঙ্গুড়া,পাবনা‎

প্রকাশিত: ০০:৪২, ১ জুলাই ২০২৫

‎হেমিলির না বলা কথা

‎"নাই প্রতিবাদ, তবুও শব্দে 
‎লেগে থাকে ক্ষীণ ব্যথা, 
‎বাবা-মা, জানো কি 
‎নিঃশব্দও বলে যায় বহু কথা!?"
‎ 
‎একটি গ্রামে বাস করত একটি মেয়ে, একটি কিশোরী, হেমিলি।  ৩ বোনের ছোট সে। ভাই নেই, তাই বাবা মা ছিল বেশ দুশ্চিন্তায়! যখন হেমিলির বড় দুই বোনের বিয়ে হয়ে যায়, তখন সব দায়িত্ব যেন এসে পরে হেমিলির ওপরে। হেমেলির  মা ছিল ভীষণ  অসুস্থ। তার বাবা বাসায় থাকে না কারণ তিনি ছিলেন খুব ব্যস্ত একজন মানুষ। হেমিলির কথা বলার সাথী তার মা। 

‎অযথা বাহিরে যায় না হেমিলি। সব সময় তার যে মায়ের দেখাশোনা করতে হয়। যখন সে স্কুলে যায়, তখন তার মায়ের জন্য অনেক চিন্তা হয়। কারণ তার মা অনেক অসুস্থ। বাসায় কোনো কাজের লোক রাখতে পারে না তারা। কারণ এই সমাজে বিশ্বাসী লোকেরও যে বড় অভাব।  বোনরা কখনো বেড়াতে এলে কিছুটা নির্ভার থাকতে পারে সে। 

‎ হেমেলি পড়াশোনাতে খুব একটা ভালো না, অন্তত সবাই তাই বলে! কিন্তু তার ইচ্ছা সে লিখবে। সে একজন কাজী নজরুল হতে চায়, যার লেখায় থাকবে প্রতিবাদ, ভালোবাসা  আর বিদ্রোহ!

‎কিন্তু তার বাবা চায় সে অন্য কিছু হোক!

‎হেমিলি স্কুলেও যায় কম। কারণ তার কোনো মনের মতো বন্ধু নেই, যে তাকে বুঝবে। হেমিলির  বুক ভরা হতাশা।  কিন্তু তাও তার কোন অভিযোগ নেই; কারো কাছে, কারো বিরুদ্ধে! 
‎ 
‎হেমিলি তার বাবা এবং মা কে অনেক ভালোবাসে। 

‎হেমিলি নিজের লেখার প্রতি খুব মনোযোগী। যখন সে অবসর পায়, তখন সে তার লেখায় সেই সময়টুকু লাগিয়ে দেয়।
‎ 
‎হেমিলি অনেক বড় একজন লেখিকা হতে চায়!

শুধু কি এতটুকু কথাতেই জীবন সীমাবদ্ধ? 

‎না!

‎হেমিলি গায়ের রং চাপা । এইতো, সাদা-কালোর মাঝামাঝি! হরিণের মতো চোখ তার, কিন্তু কে দেখে? এই সমাজে এখনো যে সাদা চামড়ার দামই বেশি!

‎হেমিলি এই নিয়ে অনেকের অনেক মন্তব্যের শিকার হয়। অনেক ফিসফাস তাকে নিয়ে। কিন্তু এতে তার দোষ কি? সৃষ্টিকর্তা তাকে নিজের মতো করে বানিয়েছে! দোষ হলে তার হবে! এটা সবাই বোঝে না!  

‎হেমিলি একজন কাজী নজরুল হতে চায়, যার লেখায় থাকবে প্রতিবাদ, ভালোবাসা  আর বিদ্রোহ!!

Mily

×