
ছবি: প্রতীকী
সকালের শুরুটাই অনেক সময় বলে দেয় দিনটি কেমন যাবে। কেউ দিন শুরু করেন তাড়াহুড়ো করে, কেউ বা ধীরে ধীরে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিন শুরু করার প্রথম ত্রিশ মিনিট যদি একটু গোছানোভাবে কাটানো যায়, তাহলে সারা দিনটাই হতে পারে বেশি ফোকাসড, গুছানো এবং কর্মক্ষমতায় ভরপুর।
আমাদের অনেকের দিন শুরু হয় মোবাইল ফোন হাতে নিয়েই। ঘুম ভাঙার পরপরই আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুকে পড়ি কিংবা খবরের শিরোনামে চোখ রাখি। অথচ ঘুম থেকে ওঠার পর এই প্রথম কিছু মিনিটই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টাই ঠিক করে দিতে পারে আপনি সারা দিন কতটা মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে পারবেন, কতটা মানসিকভাবে স্থির থাকতে পারবেন।
সকালে ঘুম থেকে উঠে কিছুক্ষণ বিছানাতেই শুয়ে চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে শ্বাস নেওয়া যেতে পারে। এতে ঘুম থেকে ওঠার ধকলটা সহজ হয়, মন শান্ত থাকে। এরপর উঠে এক গ্লাস পানি খেয়ে শরীরকে একটু সচল করা ভালো। হালকা কিছু স্ট্রেচিং কিংবা মাত্র কয়েক মিনিটের সহজ যোগব্যায়ামও দারুণ কাজে দেয়। এতে শরীরে রক্ত চলাচল বাড়ে এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধি পায়, যা মনকে চনমনে করে তোলে।
যদি সম্ভব হয়, তাহলে মাত্র ১০ মিনিটের জন্য হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। এতে শরীর যেমন সজাগ হয়, তেমনি মনের ওপরেও পড়ে ইতিবাচক প্রভাব। বিশেষজ্ঞরা বলেন, সকালে শরীরচর্চা করলে মন স্থির থাকে এবং কর্মস্পৃহা বাড়ে।
এছাড়া, দিনের শুরুতেই একটি ছোট নোটবুকে আজকের পরিকল্পনাগুলো লিখে ফেলাও ভালো অভ্যাস। কী কী কাজ করতে চান, কোন কাজটি আগে করা প্রয়োজন—এই বিষয়গুলো মাথায় থাকলে সময় অপচয় কম হয়। পরিকল্পনা থাকলে কাজের গতি বাড়ে, মানসিক চাপও কমে।
সকালের এই ৩০ মিনিটে নিজের প্রতি যত্নশীল হওয়া সবচেয়ে জরুরি। এই সময়টায় নিজের ভালো থাকার জন্য একটু কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, ইতিবাচক কিছু ভাবা কিংবা নিজেকে ভালো কিছু বলা— এগুলো খুব ছোট কাজ হলেও মনের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।
যেসব মানুষ সকালে নিজের জন্য কিছু সময় রাখতে পারেন, তারা শুধু কাজেই দক্ষ হন না, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিকভাবে বেশি শান্ত থাকেন। তিনি আরও বলেন, “এই অভ্যাসগুলো আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, আত্মনিয়ন্ত্রণ শেখায়।”
সকালের এই সময়টুকু প্রযুক্তির বাইরে কাটানো খুব জরুরি। ফোন না ধরেই যদি আপনি নিজের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন, তাহলে আপনি নিজের জন্যই বড় একটি উপকার করছেন।
দিনের অনেক কিছুই আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না, কিন্তু দিনের শুরুটা আমাদের হাতে। এই ত্রিশ মিনিটেই লুকিয়ে আছে সারাদিন ভালোভাবে কাটানোর চাবিকাঠি। একটু পরিকল্পনা, একটু সচেতনতা, আর একটু নিজের প্রতি মনোযোগ— এই তিনটি জিনিস যদি সকালের শুরুতে রাখতে পারেন, তাহলে দিনটা হবে আপনার নিয়ন্ত্রণে।
শুধু একটু চেষ্টা দরকার, আর সামান্য কিছু বদল। আপনি চাইলে কাল থেকেই শুরু করতে পারেন। দিন শুরুর প্রথম ত্রিশ মিনিট বদলে দিতে পারে আপনার পুরো জীবনের গতি।
এম.কে.