
ছবি: সংগৃহীত।
দিন শুরু করার সময়টা শুধু অভ্যাস নয়, এটি আমাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠা—সাধারণত সূর্যোদয়ের আশপাশে—শুধু সময় ব্যবস্থাপনাই নয়, বরং এটি শরীর, মন এবং কর্মক্ষমতার ওপর দীর্ঘস্থায়ী ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
সকালের ঘুম থেকে ওঠার স্বাস্থ্য উপকারিতা কী কী?
১. মানসিক স্বচ্ছতা ও মনোযোগ বৃদ্ধি:
ভোরের ঠান্ডা ও নীরব পরিবেশ মনোসংযোগের জন্য আদর্শ। সকালে ঘুম থেকে উঠে পড়াশোনা, পরিকল্পনা বা সৃজনশীল কাজ করলে মস্তিষ্ক সবচেয়ে কার্যকরভাবে কাজ করে।
২. শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ির সঙ্গে সামঞ্জস্য:
ঘুম এবং জাগরণের সুনির্দিষ্ট ছন্দ (সারকেডিয়ান রিদম) বজায় রাখা শরীরের হরমোন নিঃসরণ, বিপাক, ও ইমিউন সিস্টেমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। খুব সকালে ওঠা শরীরের এই স্বাভাবিক ছন্দ বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৩. ব্যায়াম ও স্বাস্থ্যচর্চার সুযোগ:
সকালেই সময় বের করা যায় হালকা ব্যায়াম, যোগা বা হাঁটার জন্য, যা সারাদিনের শক্তি ও মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৪. মানসিক চাপ কমায়:
গোটা দিন ধরে ব্যস্ততা ও চাপের মধ্যে পড়ে যাওয়ার আগে সকালের নিরিবিলি সময় মানসিক স্বস্তি আনে এবং দিনের জন্য ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করে।
৫. ভালো ঘুম নিশ্চিত করে:
যারা প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে সকালে ওঠেন, তাদের রাতে ঘুম আসতে সুবিধা হয়। ফলে ঘুমের গুণগত মান উন্নত হয়, যা সার্বিক সুস্থতার জন্য অপরিহার্য।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত সকালে ওঠেন, তারা বিষণ্নতা, উদ্বেগ ও স্থূলতার মতো সমস্যায় কম ভোগেন। পাশাপাশি, তাদের জীবনের প্রতি সন্তুষ্টি ও আত্মবিশ্বাসও তুলনামূলক বেশি হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হঠাৎ ভোর ৫টায় ওঠা নয়, বরং ধীরে ধীরে ঘুমের সময় এগিয়ে আনা এবং একটি নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলাই সবচেয়ে কার্যকর। ঘুমের আগে মোবাইল বা স্ক্রিন ব্যবহার কমানো, ক্যাফেইন এড়িয়ে চলা এবং ঘুমের জন্য শান্ত পরিবেশ নিশ্চিত করাও খুব জরুরি।
খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠা শুধুই একটা অভ্যাস নয়, বরং এটি একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের ভিত্তি। শারীরিক শক্তি, মানসিক প্রশান্তি ও সৃজনশীলতা—সবকিছুর উন্নয়নেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে দিনের সূচনাটি কীভাবে করা হচ্ছে। তাই আগামীকাল থেকেই হয়তো ঘড়ির অ্যালার্মটা একটু আগেই সেট করে নিতে পারেন!
মিরাজ খান