
ছবি: সংগৃহীত।
হঠাৎ করে কি আপনার হাতে বা পায়ে শিরাগুলো আগের চেয়ে বেশি ফোলানো বা উঁচু হয়ে উঠছে বলে মনে হচ্ছে? অনেক সময় এগুলো সাধারণ কারণে হলেও, কখনো কখনো তা হতে পারে গুরুতর স্বাস্থ্যগত সমস্যার ইঙ্গিত। নিচে তুলে ধরা হলো শিরা ফোলানোর ৮টি সম্ভাব্য কারণ এবং কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত হতে পারে।
১. ব্যায়াম:
শরীরচর্চা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, তবে ভারোত্তোলন বা উচ্চমাত্রার ব্যায়াম রক্তপ্রবাহ বাড়িয়ে দেয় এবং পেশিকে স্ফীত করে তোলে, ফলে শিরাগুলো ত্বকের উপরে উঠে আসে। নিয়মিত এ ধরনের ব্যায়াম করলে কিছু শিরা স্থায়ীভাবে চোখে পড়ার মতো হয়ে যেতে পারে।
২. বার্ধক্য:
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বক পাতলা ও কম ইলাস্টিক হয়ে পড়ে। ফলে শিরাগুলোর উপর থেকে চর্বির আবরণ কমে যায় এবং তা দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। এছাড়া, বয়সের কারণে শিরার দেয়ালও দুর্বল হতে পারে। যদিও এটি বিপদজনক নয়, তবে বয়সের স্বাভাবিক লক্ষণ।
৩. গরম আবহাওয়া:
উষ্ণ আবহাওয়ায় শিরাগুলো প্রসারিত হয় এবং ফোলানো দেখায়। গরমের দিনে অনেকক্ষণ বাইরে থাকলে শিরা চোখে পড়ার মতো ফেঁপে ওঠে। তবে তাপমাত্রা কমে গেলে সাধারণত এই সমস্যা আপনাতেই ঠিক হয়ে যায়।
৪. শরীরের চর্বি কমে যাওয়া:
ত্বকের নিচে থাকা চর্বি শিরাগুলোকে আড়াল করে রাখে। হঠাৎ করে ওজন কমে গেলে এই চর্বির স্তর পাতলা হয়ে যায়, ফলে শিরাগুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
৫. হরমোনের ভারসাম্যহীনতা:
হরমোনের পরিবর্তনের ফলে শিরাগুলোর ওপর প্রভাব পড়ে। গর্ভাবস্থায় বা মেনোপজের সময় হরমোনের পরিবর্তন শিরা ফোলাতে পারে, বিশেষ করে পা ও পেলভিক অঞ্চলে। এ সময়ে রক্তপ্রবাহ বাড়ে এবং শিরার স্থিতিস্থাপকতা কমে যেতে পারে।
৬. বংশগত কারণ:
যদি পরিবারের অন্য সদস্যদের চোখে পড়ার মতো শিরা থাকে, তবে আপনিও একই প্রবণতা পেতে পারেন। ত্বকের পুরুত্ব ও শিরার শক্তি অনেকাংশে বংশগতভাবে নির্ধারিত হয়।
৭. রক্ত জমাট বাঁধা (ব্লাড ক্লট):
রক্তনালীতে জমাট বাঁধলে শিরা ফুলে যায় এবং তা শক্ত বা ব্যথাযুক্ত হতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতি বিপজ্জনক হতে পারে। যদি হঠাৎ ফোলা শিরার সঙ্গে ব্যথা বা লালভাব দেখা দেয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
৮. অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা:
উচ্চ রক্তচাপসহ কিছু হৃদ্রোগ শিরার ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে, ফলে শিরা ফেঁপে ওঠে। এছাড়া, বিভিন্ন সঞ্চালনজনিত রোগ (circulatory disorders) একই ধরনের উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে। যদি শিরা ফোলা স্থায়ী হয় বা ধীরে ধীরে বাড়ে, তবে চিকিৎসা পরীক্ষা করানো উচিত।
শিরা ফোলানো সব সময়ই চিন্তার কারণ নয়। তবে উপরের উপসর্গগুলোর সঙ্গে যদি ব্যথা, ফোলাভাব বা রঙ পরিবর্তনের মতো কিছু যুক্ত হয়, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি। নিজের শরীরকে জানুন, বোঝার চেষ্টা করুন, এবং প্রয়োজন হলে সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নিন।
সূত্র: https://short-link.me/11ZF-
মিরাজ খান