ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

পাবনায় বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালনা: নিয়ম না মানায় বাড়ছে ঝুঁকি

এস এম নাহিদ হাসান, কনট্রিবিউটিং রিপোর্টার, ফরিদপুর, পাবনা

প্রকাশিত: ০৮:৪০, ১ জুলাই ২০২৫

পাবনায় বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালনা: নিয়ম না মানায় বাড়ছে ঝুঁকি

‎চিত্র: পাবনার ফরিদপুরে সদর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চল, সর্বত্র সড়কে হেলমেট ছাড়াই মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন আরোহীরা (ছবি: জনকণ্ঠ)

পাবনার ফরিদপুরে মোটরসাইকেল চালনায় মানা হচ্ছে না কোন বিধিনিষেধ। দ্রুতগতির এই বাহনটি সহজলভ্য। এর ব্যবহার সহজ এবং খরচ কম হওয়ায় দেশের প্রায় সকল অঞ্চলের মতো ফরিদপুরেও রয়েছে বিপুলসংখ্যক মোটরসাইকেল ব্যবহারকারী।

তবে এই ব্যবহারকারীদের অধিকাংশই মোটরসাইকেল চালনার ক্ষেত্রে দৃশ্যত কোন আইন মানে না। মোটরসাইকেল চালনার ক্ষেত্রে প্রচলিত ট্রাফিক আইনের পাশাপাশি অন্যান্য যানবাহনের তুলনায় কিছু অতিরিক্ত নিয়ম মানতে হয়-যেমন সনদপ্রাপ্ত নিরাপদ হেলমেট পরিধান, নিরাপত্তা পোশাক (জুতা ও অন্যান্য) পরিধান, দুইজনের বেশি আরোহী না থাকা ইত্যাদি। এই আইনগুলো মোটরসাইকেল এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কারণ এগুলো অনিরাপদ মোটরসাইকেল যাত্রাকে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ করে।

কিন্তু সরেজমিনে ফরিদপুর সদর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের রাস্তাঘাটে-সর্বত্র দেখা গেছে যে অধিকাংশ মোটরসাইকেল চালকের হেলমেট নেই। কিছু ক্ষেত্রে চালকের থাকলেও আরোহীর হেলমেট নাই। কিছু ক্ষেত্রে মোটরসাইকেলে তিনজন এমনকি চারজন নিয়েও চলতে দেখা যায়।

এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় হেলমেটবিহীন এক মোটরসাইকেল চালকের সাথে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই চালক বলেন, ‘মাথায় হেলমেট দিলে গরম লাগে। তাই হেলমেট ব্যবহার করা হয় না।’ নিরাপত্তার বিষয়টি মনে করিয়ে দিলে তিনি হেসে বলেন, ‘ভাগ্যে খারাপ থাকলে কি করব বলেন!’

ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার অর্থোপেডিক সার্জন ডাঃ মোঃ রেহানুল ফুয়াদ বলেন, ‘দুর্ঘটনায় সামান্য আহতরা বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়ে চলে যান এবং গুরুতর আহতরাও উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরের বড় হসপিটালগুলোতে চলে যান। ফলে দুর্ঘটনায় এবং বিশেষত, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় চিকিৎসাধীন রোগীদের ফলোআপ করতে পারি না। আমাদের হসপিটালের ন্যূনতম সুযোগ সুবিধা থাকলেও আমরা সবাই সকল রোগীর প্রতি বিশেষ করে দুর্ঘটনায় পতিত রোগীর প্রতি সর্বোচ্চ যত্ন নিই।’

তিনি আরও বলেন, ‘অর্থোপেডিক সার্জন হিসেবে বলতে পারি হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল চালনা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া উচিত। কারণ মানসম্মত হেলমেট মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।’

ফরিদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসনাত জামান বলেন, ‘ফরিদপুর থানা পুলিশ এ ব্যাপারে সব সময় সচেতন। আমরা নিয়মিতভাবে চেকপোষ্টের ব্যবস্থা করি, আরোহীদের সচেতন করি এবং প্রয়োজন হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করি।’

তবে শুধুমাত্র আইন প্রয়োগ করে নয় বরং কঠোর আইন প্রয়োগের পাশাপাশি ব্যক্তি এবং সরকারি উদ্যোগে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে। এর মাধ্যমে মোটরসাইকেল চালনায় দুর্ঘটনা ঝুঁকি কমানো যাবে বলে অভিমত দেন অভিজ্ঞজনেরা।

রাকিব

×