
হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর হার বিগত ৫০ বছরে প্রায় ৯০% কমেছে — এটি নিঃসন্দেহে চিকিৎসা বিজ্ঞানের এক বড় অগ্রগতি। কিন্তু সেই সুখবরের বিপরীতে রয়েছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা: যুক্তরাষ্ট্রে অন্যান্য হৃদরোগজনিত মৃত্যুর হার একই সময়ে ৮১% বেড়েছে।
এই নতুন গবেষণাটি Journal of the American Heart Association-এ প্রকাশিত হয়েছে।
ডা. সারা কিং, স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির মেডিকেল রেসিডেন্ট ও প্রধান গবেষক বলেন,
“গত পাঁচ দশকে হৃদরোগ সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়া ও চিকিৎসার পদ্ধতি অনেক উন্নত হয়েছে। আগে যে হার্ট অ্যাটাককে নিশ্চিত মৃত্যু হিসেবে ধরা হতো, এখন অনেকেই তা থেকে বেঁচে যান।”
কিন্তু অন্য ধরনের হৃদরোগের হুমকি বাড়ছে:
-
হার্ট ফেইলিউর (হৃদযন্ত্রে রক্ত পাম্পে অক্ষমতা) থেকে মৃত্যুর হার বেড়েছে ১৪৬%
-
হাই ব্লাড প্রেসারজনিত হৃদরোগে মৃত্যুর হার বেড়েছে ১০৬%
-
হার্ট অ্যারিথমিয়া (অনিয়মিত হার্টবিট) থেকে মৃত্যুর হার বেড়েছে ৪৫০%
হার্ট অ্যাটাক থেকে বাঁচা এখন সহজ হলেও…
ডা. অ্যান্ড্রু ফ্রিম্যান, কার্ডিওভাসকুলার বিশেষজ্ঞ (যিনি গবেষণায় যুক্ত নন) বলেন,
“আজকাল হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা কম — তবে দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক অক্ষমতা বা অসুস্থতা অনেক বেশি।”
যেমন, রোগী সারাজীবন উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল বা পানি জমা নিয়ন্ত্রণে ওষুধের ওপর নির্ভরশীল থেকে যান।
কী কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে?
এই গবেষণায় বলা হয়েছে, গত ৫০ বছরে যেসব ঝুঁকিপূর্ণ কারণ বেড়েছে:
-
স্থূলতা (১৯৭০-এ ১৫% → ২০২২-এ ৪০%)
-
টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও প্রিডায়াবেটিস (বর্তমানে প্রায় প্রত্যেক ২ জনে ১ জন প্রভাবিত)
-
উচ্চ রক্তচাপ (১৯৭৮-এ ৩০% → ২০২২-এ প্রায় ৫০%)
-
অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা
সিনিয়র লেখক ডা. লতা পালানিয়াপ্পান বলেন,
“হার্ট ডিজিজ এখনো বিলীন হয়নি — এখন আমাদের মনোযোগ দিতে হবে প্রতিরোধের দিকে, যেটা শৈশব থেকেই শুরু হওয়া উচিত।”
অতিরিক্ত একটি কারণ:
‘বেবি বুমার’ প্রজন্ম এখন এমন বয়সে পৌঁছেছে, যেখানে হৃদরোগের ঝুঁকি স্বাভাবিকভাবে বেশি থাকে — এটিও হৃদরোগ বৃদ্ধির একটি বড় কারণ।
সারকথা: হার্ট অ্যাটাক থেকে বাঁচার সম্ভাবনা বাড়লেও, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট ফেইলিউর ও অ্যারিথমিয়ার মতো রোগে মৃত্যুর হার এখন উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। সচেতনতা, জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এবং প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপই হতে পারে দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ হৃদয়ের মূল চাবিকাঠি।
Jahan