
সংগৃহীত
মধ্যপ্রাচ্যে নতুন নতুন কূটনৈতিক সমঝোতার মাঝে এবার আলোচনায় সিরিয়া ও ইসরায়েলের সম্ভাব্য সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ইঙ্গিত। যদিও দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বৈরিতা, গোলান মালভূমি নিয়ে বিরোধ এবং ফিলিস্তিন ইস্যু সিরিয়ার অবস্থানকে কঠোর রেখেছে, তবুও আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সিরিয়ার অবস্থানে নরম হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো এবং সুদানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে ‘আব্রাহাম চুক্তি’র মাধ্যমে। এর ফলে তেলআবিব এখন মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতায় জড়িত। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রবণতা সিরিয়াকেও প্রভাবিত করতে পারে।
তবে সিরিয়া এখনো ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। ১৯৬৭ সালে ইসরায়েলের দখলে যাওয়া গোলান মালভূমি এখনো দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু। বাশার আল-আসাদ সরকারের দৃষ্টিতে, ইসরায়েল এখন ‘অবৈধ দখলদার শক্তি’।
সিরিয়ার ইসরায়েলবিরোধী অবস্থানের অন্যতম কারণ হলো ইরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সামরিক ও কৌশলগত সম্পর্ক। সেইসঙ্গে লেবাননের হিজবুল্লাহকেও সিরিয়া দীর্ঘদিন ধরে সহায়তা করে এসেছে। ইসরায়েলের দৃষ্টিতে, সিরিয়ায় ইরানের প্রভাব ও অস্ত্রবহর সরবরাহ একটি নিরাপত্তা হুমকি—যার জবাবে ইসরায়েল নিয়মিত সিরিয়ার অভ্যন্তরে বিমান হামলা চালিয়ে আসছে।
সম্প্রতি আরব লীগের সদস্যপদে ফিরে আসা এবং সৌদি আরবসহ অনেক দেশের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরায় জোরদার করায় সিরিয়া এখন এক ধরনের কূটনৈতিক পুনর্জন্মের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই নতুন বাস্তবতায়, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে সিরিয়া হয়ত কৌশলগত কিছু পরিবর্তনের চিন্তা করতে পারে, যদিও ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ এখনো বহু দূরের ভাবনা বলে অনেকে মনে করেন।
সিরিয়া-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ এখনো বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে, তবে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতির পরিবর্তন এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্রকে এক সময় এক টেবিলে বসতে বাধ্য করতে পারে—বিশেষ করে যদি ভেতরে-বাইরে চাপ বাড়তে থাকে।
হ্যাপী