ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০২ জুলাই ২০২৫, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২

ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে অভিবাসন: লিবিয়াকে চাপ প্রয়োগে একযোগে এগোচ্ছে ইইউ ও গ্রিস

প্রকাশিত: ০০:২১, ২ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০০:২২, ২ জুলাই ২০২৫

ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে অভিবাসন: লিবিয়াকে চাপ প্রয়োগে একযোগে এগোচ্ছে ইইউ ও গ্রিস

অবৈধ অভিবাসন রোধে লিবিয়ার ওপর কঠোর অবস্থান নিতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপে শরণার্থী প্রবেশ বেড়ে যাওয়ায়, গ্রীস, ইতালি ও মাল্টার সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে লিবিয়া সফরে যাচ্ছেন ইউরোপীয় কমিশনের অভিবাসন কমিশনার ম্যাগনাস ব্রুনার।

মঙ্গলবার (৩০ জুন) এথেন্সে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে ব্রুনার বলেন, “এই মুহূর্তে এটি আমাদের জন্য একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। লিবিয়া এখন আমাদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। আগামী সপ্তাহে আমরা একসঙ্গে লিবিয়া সফরে যাচ্ছি, কারণ আমাদের দ্রুত এবং দৃঢ়ভাবে এগোতে হবে।”

গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোতাকিসের সঙ্গে বৈঠক শেষে ব্রুনার জানান, সফরকালে তারা লিবিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের জাতিসংঘ-স্বীকৃত সরকার এবং পূর্বাঞ্চলের প্রতিদ্বন্দ্বী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে লিবিয়া পূর্ব ও পশ্চিম দুই প্রশাসনে বিভক্ত, যাদের প্রত্যেকটির পেছনে রয়েছে আলাদা সশস্ত্র গোষ্ঠী ও আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপোষকতা।

শরণার্থী সংকট ঘিরে নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে গ্রিস সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে, লিবিয়া থেকে ক্রিট দ্বীপের দিকে যাত্রী বোঝাই নৌকা আসার প্রবণতা বাড়ায় তারা আন্তর্জাতিক জলসীমায় যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করবে। এই রুটটি তুরস্ক ও গ্রিসের মধ্যবর্তী রুটের চেয়েও অনেক বেশি বিপজ্জনক।

২০২৩ সালে, লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ‘আড্রিয়ানা’ নামের একটি ট্রলার গ্রিস উপকূলে ডুবে গেলে শতাধিক অভিবাসীর মৃত্যু হয়।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, ২০২১ সালে লিবিয়া থেকে ইউরোপে পাড়ি জমানো শরণার্থী ও অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৩২,৪০০, যা ২০২০ সালের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। লিবিয়া থেকে ইউরোপগামী এই বিপজ্জনক সমুদ্রপথ শুধু অবৈধ অভিবাসনের কেন্দ্রবিন্দু নয়, বরং সেখানকার শরণার্থীদের ওপর চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন, নির্যাতন ও সহিংসতার বহু প্রমাণও পাওয়া গেছে।

ইউরোপীয় কমিশন সভাপতি উরসুলা ভন ডার লেয়েন গত এপ্রিলে ঘোষণা দিয়েছেন, ইউরোপীয় সীমান্ত ও উপকূলরক্ষী সংস্থা ফ্রনটেক্স-এর জনবল ৩০ হাজারে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপ ইউরোপের বহির্বিশ্ব সীমান্ত সুরক্ষায় বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর মরিয়া চেষ্টা ক্রমেই বাড়ছে। একদিকে এই সংকট মানবিক বিপর্যয় তৈরি করছে, অন্যদিকে ইউরোপীয় নিরাপত্তার জন্যও বড় হুমকি হয়ে উঠেছে। লিবিয়ার সঙ্গে সমন্বিত কৌশল গ্রহণ এবং মানবাধিকার নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাই এখন সময়ের দাবি।


সূত্র:ইউরো নিউজ

আফরোজা

×