
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের কালকিনি পৌর এলাকার গোপালপুর নামক স্থানে দীর্ঘদিন যাবত পৌরসভার বর্জ্য ফেলার কারণে তৈরি হয়েছে ময়লার ভাগাড়। তবে দীর্ঘদিন যাবত এই বর্জ্য ফেলার কারণে মহাসড়কের পাশে খানাখন্দ ভরে গিয়ে তা এখন অনেকাংশে মহাসড়ক উপরে চলে আসছেন। এদিকে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যানবাহনের চাঁপ বেড়েছে কয়েকগুন। এই সড়কের সংকীর্ণতা বহু গুনে বাড়িয়ে দিয়েছে দুর্ঘটনার প্রবণতা। যার ফলে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গোপালপুর নামক স্থানটি হয়ে উঠেছে একটি মরণ ফাঁদ। প্রায় এখানে ঘটে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। তাই অতি দ্রুত একটি ডাম্পিং স্টেশন স্থাপন করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়ছেন স্থানীয় সচেতন মহল। অপরদিকে ময়লার ভাগাড়টি জন্য ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন গাড়ি চালক, পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
আজ বুধবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ময়লার স্তুপ জমতে জমতে তা মহাসড়কের জায়গা প্রায় দখল করে ফেলেছে। যার ফলে ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। দেখা যায় ময়লা ফেলার স্থানে প্রতি বছরই কোন না কোন দুর্ঘটনা ঘটে আসছে এর সাথে যুক্ত হয়েছে মহাসড়ক দখল করে ময়লা ফেলার কারণে তৈরি সড়কের সংকীর্ণতা। এদিকে ময়লার ভাগাড়ে প্রতিনিয়ত আগুন জ্বালিয়ে ময়লা পোড়ানোর ফলে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কয়েকটি গাছ পুড়ে কালো বর্ণ ধারণ করেছে। এতে করে পরিবেশ বিপর্যয়ের ব্যাপক আশঙ্কা করা হচ্ছে। পোড়া গাছগুলো মাঝেমধ্যেই ভাগাড়ের মধ্য দিয়ে পরিবাহিত বিদ্যুৎ লাইন কিংবা বিদ্যুৎ লাইনের খুঁটির উপর উপড়ে পরে বিদ্যুৎ পরিবাহনে বিঘ্ন ঘটায়। এতে করে উক্ত এলাকার বাসিন্দাদের প্রায়ই বিদ্যুৎ বিহীনভাবে কাটাতে হয়। ময়লার ভাগাড়ের ধোয়ার ফলে চারপাশের এলাকা কালো ধোয়ায় অন্ধকার হয়ে যায় ফলে যানবাহন ঠিক ভাবে চলাচল করতে পারে না। এই কারণে ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা এবং বায়ু দূষণ হচ্ছে চরম মাত্রায়। গাড়ি চালক, পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ময়লার ভাগাড়টি। ময়লা ফেলার স্থানের চারদিকে ঘনবসতি হওয়ার ফলে জনস্বাস্থ্য আজ হুমকির মুখে। এ বিষয়ে এলাকাবাসীদের মধ্যে বিরাজ করছে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা বলেন, দুর্গন্ধের কারণে এখানে থাকাই দায়। নাক মুখ চেপে চলাচল করতে হয়। দুর্গন্ধের কারণে অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করছি। পৌর প্রশাসকের কাছে আমাদের দাবি, ময়লার ভাগাড়টি এখান থেকে অন্য স্থানে সরিয়ে নিন। বাসযাত্রী আকবর হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, ময়লার অংশটুকু পার হতে গেলেই দুর্গন্ধ গাড়ির মধ্যে ঢুকে। ময়লার স্থান পার হলেও দুর্গন্ধ যেতে সময় লাগে। অনেক সময় বাচ্চারা বমি করে ফেলে।
স্থানীয় বাসিন্দা খোকন, রাজ্জাকসহ বেশ কয়েকজন বলেন, প্রায় পাঁচ-সাত বছর পূর্বে থেকেই পৌরসভা কর্তৃক এখানে ময়লা ফেলা হচ্ছিল কিছুদিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হলেও রহস্যজনক কারণে পুনরায় আবার চালু করে। এতে করে আমরা যারা বয়োবৃদ্ধ আছি তাদের চরম স্বাস্থ্যগত সমস্যা হচ্ছে। এবং আমরা এ পথ ধরেই প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে পড়তে যাই। ময়লার স্তুপের পাশ দিয়ে যখন যাই তখন আমাদের শ্বাসকষ্ট হয়। আমাদের একটিই চাওয়া ময়লার ভাগারটি যেন এই জনবহুল এলাকা হতে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে কালকিনি পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফ উল আরেফীন বলেন, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের কালকিনি পৌরসভার গোপালপুর নামক স্থানে সড়কের পাশে পৌরসভার ময়লা ফেলা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আঁখি