ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

ইসরায়েলের পতাকা উড়িয়ে ‘মিস ইন্দোনেশিয়া’ থেকে বহিষ্কার! ভাইরাল ভিডিওতে তোলপাড়

প্রকাশিত: ২০:০৪, ২ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২০:০৪, ২ জুলাই ২০২৫

ইসরায়েলের পতাকা উড়িয়ে ‘মিস ইন্দোনেশিয়া’ থেকে বহিষ্কার! ভাইরাল ভিডিওতে তোলপাড়

ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের পতাকা হাতে নাচার একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ‘মিস ইন্দোনেশিয়া’ প্রতিযোগিতা থেকে এক প্রতিযোগীকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ঘটনা ইন্দোনেশিয়ায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে, কারণ দেশটি দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে আসছে।

মেরিন্স কোগোয়া, যিনি ৯ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য ‘মিস ইন্দোনেশিয়া’ ফাইনালে হাইল্যান্ড পাপুয়া প্রদেশের প্রতিনিধিত্ব করার কথা ছিল, তাকে গত সপ্তাহে প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দেওয়া হয়। কারণ ২০২৩ সালের মে মাসে ধারণ করা একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং সমালোচনার ঝড় ওঠে।

ওই ভিডিওতে কোগোয়াকে ইসরায়েলের পতাকা হাতে নাচতে দেখা যায়। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ইন্দোনেশিয়ানদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রতিযোগিতার আয়োজকরা কোগোয়াকে চুপিসারে প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দিয়ে দেন। তার পরিবর্তে একই প্রদেশের রানার-আপ কারমেন আনাস্তাসিয়া-কে প্রতিযোগিতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

সোমবার ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে কোগোয়া জানান—যার বায়োতে লেখা “I stand with Israel”— যে তাকে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে “পাবলিক মন্তব্যের” কারণে, অর্থাৎ সামাজিক মাধ্যমে যে প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে তার ভিত্তিতে।

তিনি লেখেন, “আমার দুই বছর পুরোনো ভিডিওটি বিভিন্ন ভুল ব্যাখ্যার মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।”
“আমি হাইল্যান্ড পাপুয়া পরিবারকে আমার আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি আমার সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু @missindonesia’র সিদ্ধান্ত এসেছে এমন মন্তব্যের ভিত্তিতে, যা আমার বিশ্বাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।”

আরব নিউজ থেকে মন্তব্য চাইলে কোগোয়া তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সাড়া দেননি।

বিশ্বের চতুর্থ সর্বাধিক জনসংখ্যার দেশ ইন্দোনেশিয়া দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনের শক্তিশালী সমর্থক। দেশটির জনগণ ও সরকার মনে করে, ফিলিস্তিনের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা তাদের সংবিধান অনুযায়ী উপনিবেশবাদের বিলুপ্তির এক অবিচ্ছেদ্য দাবি।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই এবং ইন্দোনেশিয়া সরকার বারবার ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি দখলের অবসান এবং ১৯৬৭-র পূর্ববর্তী সীমার ওপর ভিত্তি করে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গাজা আক্রমণের পর দেশজুড়ে লক্ষাধিক ইন্দোনেশিয়ান ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত পণ্য ও কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে গণবয়কটে অংশ নিচ্ছেন।

এ পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ৫৬,০০০’র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১,৩৩,০০০’র বেশি। দ্য ল্যানসেট মেডিকেল জার্নালে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, মৃতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে—প্রায় ৪১ শতাংশ মৃত্যুর তথ্য রিপোর্টেই আসেনি।

ওই গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, ক্ষুধা, আঘাত এবং চিকিৎসা সুবিধা না পাওয়ার কারণে যেসব মৃত্যু হয়েছে সেগুলোও এই হিসাবের বাইরে, কারণ ইসরায়েলি বাহিনী গাজার অধিকাংশ অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে এবং চিকিৎসা ও খাদ্য সহায়তা প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করছে।

আবির

×