
ফুলছড়ির উড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর উড়িয়া থেকে কাটিয়ারভিটা পর্যন্ত প্রায় ৩ কি.মি এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে
কমেছে নদ-নদীর পানি, সেইসঙ্গে গাইবান্ধার যমুনা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের তীরবর্তী এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। যার ফলে দিশাহারা হয়ে পড়েছে নদ-নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। আতঙ্কে দিন কাটছে নদী পাড়ের বাসিন্দাদের। এর ফলে তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাপাশিয়া, হরিপুর, এরেন্ডাবাড়ি, উড়িয়া ও ফজলুপুর ইউনিয়নে ভাঙনের ফলে বসতবাড়ি, আবাদি জমিসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
ফুলছড়ির উড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর উড়িয়া থেকে কাটিয়ারভিটা পর্যন্ত প্রায় ৩ কি.মি এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে উড়িয়া ইউনিয়নের কাটিয়ারভিটা, উত্তর উড়িয়া, কালাসোনা, জোড়াবাড়ি, কাবিলপুর গ্রাম ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর, বেলকা, কাপাশিয়াসহ শ্রীপুর ইউনিয়নের পুটিমারি এলাকা। অপরদিকে পানি হ্রাস পাওয়ায় সদর উপজেলার কামারজানির কটিয়াভিটা এবং ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও তিস্তা, ঘাঘট, করোতোয়া, বাঙালি নদীর কয়েকটি স্থান থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় বাঁধগুলো ঝুঁকিতে পড়েছে।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান জানান, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদীর পানি কমে যাওয়ার ফলে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গাইবান্ধার সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার পাড়ঘেঁষা কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা নদী ভাঙনে আতঙ্কে রয়েছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনও শুরু হয়েছে। গত বছরের মতো এবারও বিভিন্ন অবোকাঠামো, বসতবাড়ি, আবাদি জমি, বিদ্যালয়, মসজিদসহ নানা স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে।
এলাকাবাসীরা জানায়, গত বছরও ভাঙনে শতাধিক বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এবারও সেই আতঙ্ক ফিরে এসেছে। অব্যাহত ভাঙনে ঝুঁকিতে পড়েছে কাটিয়ারভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর কালাসোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উড়িয়া কমিউনিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ কালিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কয়েকশত বসতবাড়ি, একটি বাজার, কবরস্থান, মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও আবাদি জমি।
একাধিকবার ভাঙনের শিকার এসব নদীপাড়ের মানুষ আবারও বসতভিটা ও ঘরবাড়ি হারানোর ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা হাবিবুর জানান, গত বছর আমাদের অনেকের বাড়িঘর নদীতে চলে গেছে। এবার আবারও ভাঙন শুরু হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে জানিয়েছে; কিন্তু এখনো কোনো কাজ শুরু হয়নি।
কাটিয়ারভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা লিপি জানান, কয়েকদিনের ভাঙনে বিদ্যালয়টি এখন ঝুঁকির মধ্যে। ভাঙনের কথা স্বীকার করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান জানান, ভাঙন ঠেকাতে জরুরিভিত্তিতে জিওব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করা হবে। পাশাপাশি ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলোতেও স্থায়ী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, প্রতিবছর বর্ষা এলেই নদী ভাঙনে ভিটেমাটি হারানোর আতঙ্কে পড়েন গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র নদের ফুলছড়িসহ ৪ উপজেলার হাজার হাজার নদী তীরবর্তী মানুষ।