
ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি দেশে-বিদেশে জিমে ওয়ার্কআউট করতে গিয়ে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। অনেকে ভাবেন, নিয়মিত জিম করলেই শরীর সুস্থ থাকবে, কিন্তু অতিরিক্ত চাপ ও ভুলভাবে ব্যায়াম করলে এই অভ্যাসই ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনতে পারে।
বিশ্বখ্যাত কার্ডিওলজিস্ট ড. দেবী শেঠি বলেন, “সাধারণত ৪০ বছরের পর যদি কেউ হঠাৎ করে উচ্চমাত্রার জিম ট্রেনিং শুরু করেন, বিশেষ করে না জেনে বা মেডিক্যাল চেকআপ ছাড়া, তাহলে তাদের হৃদযন্ত্রে মারাত্মক চাপ পড়ে। এতে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কয়েক গুণ বেড়ে যায়।”
ফিটনেস বিশেষজ্ঞ এবং ভারতের অন্যতম সেলিব্রিটি ট্রেনার ইয়াসমিন করাচিওয়ালা বলেন, “অনেকেই অন্যকে দেখে ভারী ওজন তোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু শরীর তার প্রস্তুত কিনা, তা বোঝার আগেই হার্টের উপরে চাপ পড়ে যায়। ওয়র্মআপ না করে বা পর্যাপ্ত বিশ্রাম ছাড়া একটানা ব্যায়াম করলে শরীর সেটা নিতে পারে না।”
এমনকি বিশ্ববিখ্যাত সাবেক মিস্টার অলিম্পিয়া রনি কোলম্যান এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আপনার শরীরের ভাষা শুনুন। যেকোনো বয়সেই ব্যায়াম করতে পারবেন, কিন্তু শরীরের সীমা অতিক্রম করলে তা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।”
কারা বেশি ঝুঁকিতে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিম্নোক্ত ব্যক্তিরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন—
* ৩৫ বছরের বেশি বয়সী যাঁরা দীর্ঘদিন একটিভ ছিলেন না
* উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল সমস্যা রয়েছে
* পরিবারে হৃদরোগের ইতিহাস আছে
* যারা সাপ্লিমেন্ট বা স্টেরয়েড ব্যবহার করেন
* হঠাৎ করে ভারী ও ইন্টেন্স ব্যায়াম শুরু করেন
কী করবেন সাবধানে থাকতে?
* ব্যায়াম শুরুর আগে অবশ্যই ইসিজি, ইকো সহ হার্ট চেকআপ করিয়ে নিন
* সার্টিফায়েড ট্রেনারের অধীনে প্রশিক্ষণ নিন
* নিয়মিত বিশ্রাম নিন এবং পর্যাপ্ত পানি পান করুন
* ধাপে ধাপে ওয়ার্কআউটের মাত্রা বাড়ান
* বুক ধড়ফড়, মাথা ঘোরা বা বুকে চাপ অনুভব করলে সঙ্গে সঙ্গে থেমে যান
সুস্থ জীবন চাইলে নিয়মিত শরীরচর্চা দরকার, তবে সেটি যেন হয় সঠিক পদ্ধতিতে, সচেতনতার সঙ্গে। কারণ, স্বাস্থ্য রক্ষা করতে গিয়ে যেন প্রাণটাই না হারাতে হয়।
আসিফ