ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

আপনার ঘরেই লুকিয়ে আছে ফুসফুস ধ্বংসের কারণ!

প্রকাশিত: ০০:০৪, ১ জুলাই ২০২৫

আপনার ঘরেই লুকিয়ে আছে ফুসফুস ধ্বংসের কারণ!

ছবি: সংগৃহীত

ফুসফুস আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা শ্বাসপ্রক্রিয়া ও রক্তে অক্সিজেন সরবরাহের জন্য দায়ী। কিন্তু আপনি জানেন কি—বাইরের দূষণ নয়, আপনার ঘরের ভেতরেই থাকতে পারে ফুসফুসের জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকর উপাদান? গবেষণা বলছে, অনেক সময় ঘরের কিছু সাধারণ জিনিস ধীরে ধীরে ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

চলুন জেনে নিই ঘরের কোন কোন উপাদান আপনার শ্বাসযন্ত্রের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে—

১. ধূপ, মোমবাতি ও সুগন্ধি স্প্রে
অনেকেই ঘরে সুগন্ধ আনার জন্য ধূপ, সুগন্ধি মোমবাতি বা রুম স্প্রে ব্যবহার করেন। কিন্তু এসব পণ্যে থাকা কেমিক্যাল ও কৃত্রিম সুবাস ফুসফুসে প্রবেশ করে অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

২. ধুলাবালি ও ফাঙ্গাস (ছাঁচ)
ঘরের কোনায় জমে থাকা ধুলাবালি ও স্যাঁতসেঁতে জায়গায় গজিয়ে ওঠা ছাঁচ (mold) অনেক সময় মারাত্মক শ্বাসযন্ত্রজনিত সমস্যা তৈরি করে। এগুলো ফুসফুসে দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে।

৩. রান্নার ধোঁয়া
বিশেষ করে বদ্ধ ঘরে রান্না করার সময় নির্গত ধোঁয়া ও তেল থেকে নির্গত ক্ষতিকর কণা (PM2.5) ফুসফুসে গিয়ে জমে। নিয়মিতভাবে এই ধোঁয়া শ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করলে দীর্ঘমেয়াদে কফ, শ্বাসকষ্ট, এমনকি ফুসফুসের ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে।

৪. ঘরের রঙ, কীটনাশক ও ক্লিনার
অনেক সময় ঘর পরিষ্কারে ব্যবহৃত ক্লিনিং এজেন্ট, ইনসেক্টিসাইড ও নতুন রঙের গন্ধ ফুসফুসের জন্য বিষের মতো কাজ করে। এসব রাসায়নিক পদার্থ শ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে গিয়ে প্রদাহ বা ইনফেকশনের কারণ হতে পারে।

৫. ধূমপান বা প্যাসিভ স্মোকিং
যদি ঘরে কেউ ধূমপান করে, তবে তা শুধু ধূমপায়ী নয়, আশপাশের মানুষের ফুসফুসের জন্যও সমান ক্ষতিকর। একে বলা হয় প্যাসিভ স্মোকিং, যা শিশুদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক।

ফুসফুস রক্ষা করতে যা করবেন:
ঘরে নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন, ধুলাবালি জমতে দেবেন না
রুম স্প্রে বা কেমিক্যালযুক্ত সুগন্ধির ব্যবহার কমান
রান্নার সময় এক্সহস্ট ফ্যান চালান বা জানালা খোলা রাখুন
ছাঁচ বা ফাঙ্গাস দেখা দিলে দ্রুত পরিষ্কার করুন
ধূমপান সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করুন

ঘরকে আমরা নিরাপদ আশ্রয় মনে করি। কিন্তু যদি সতর্ক না থাকি, তাহলে এই ঘরেই লুকিয়ে থাকা কিছু ক্ষতিকর উপাদান ধীরে ধীরে আমাদের ফুসফুসকে ধ্বংস করে দিতে পারে। তাই এখনই সচেতন হোন, নিজের ও পরিবারের ফুসফুসকে নিরাপদ রাখুন।

ফারুক

×