
ছবি: সংগৃহীত
রজনীকান্ত সেনের বিখ্যাত লাইন "কুঁড়ে ঘরে থেকে করো শিল্পের বড়াই"। শিল্পের বড়াই করার অধিকার একমাত্র বাবুই পাখিরই আছে, কী অপূর্ব নৈপুণ্য, নিখুঁত দৃষ্টিনন্দন বুননে তাল গাছে ঝুলে থাকা বাবুই পাখির বাসা।
যদিও বর্তমানে তাল গাছের সংখ্যা কমেছে, বাবুই পাখির বাসাও আগের মতো দেখা যায় না। তাল গাছ যতটা দেখা যায়, বাবুই পাখির বাসা ততটাও দেখা যায় না। নগরায়ণের ফলে এই তাঁতি পাখি হয়তো তাদের জন্য বসবাসযোগ্য মনোরম পরিবেশ খুঁজে পাচ্ছে না। বর্তমান প্রজন্ম আমাদের মতো বইয়ে বাবুই পাখির অপূর্ব নৈপুণ্য সৃষ্টি নিদর্শন শিল্পী মনা কারুকার্য বাস্তবে তেমন একটা উপলব্ধি করতে পারে না; তারা শুধুমাত্র বই নিয়ে সীমাবদ্ধ।
একটা জনপ্রিয় বাংলা গানেও বাবুই পাখির বাসার সৌন্দর্য ফুটে উঠেছিল, সেটা হচ্ছে "বাবুই পাখির সাজানো বাসা, শিল্পীর আঁকা যত ছবি"। এমন অনেক গল্প, কবিতা, ছড়া, গান, ক্যানভাসে স্থান পেতো বাবুই পাখি; এতে বুঝা যায় বাবুই পাখির বাসা আমাদের প্রাণ জুড়াতো।
সম্প্রতি নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলায় সাতের দিঘির পাড়ে, ঠিক তিন রাস্তার মোড়ে চোখে পড়েছিল একটি তাল গাছে দৃষ্টিনন্দন বাবুই পাখির বাসা। হালকা বৃষ্টিতে এই অপূর্ব বিলুপ্তির পথের ঐতিহ্যবাহী সৌন্দর্য দেখে আমরা যারা ছিলাম সবাই এটিকে ক্যামেরাবন্দি করেছিলাম, আর কিছুক্ষণের জন্য ফিরে গেলাম ছেলেবেলার সেই ঝড়ের দিনে বাবুই পাখির ছিটকে পড়া বাসা কুড়ানোর কী অপূর্ব স্মৃতিচারণ।
উপজেলার বাসিন্দা সোহেল বলেন, "এ পথ দিয়ে যখনই যাই আমি বাবুই পাখির বাসার বুনন শিল্পটি লক্ষ্য করি এবং এই লাইনটা মনে পড়ে যায়, 'আমি থাকি মহা সুখে অট্টালিকা পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোধ বৃষ্টি ঝড়ে'।"
মেডিসিন কোম্পানির এমপিও হাসানুজ্জামান বলেন, "বাবুই পাখির এই সুন্দর বাসাগুলো এখন আর তেমন দেখা যায় না। আমরা ছোট বেলায় প্রায় তাল গাছে এই বাবুই পাখির বাসা দেখতাম, বাবুই পাখির কিচিরমিচির শব্দে প্রাণ ভরে যেতো। তবে আমাদের এটিকে রক্ষা করা প্রয়োজন। নগরায়ণের নামে অক্সিজেন সরবরাহকারী তাল গাছ না কেটে ফেললে হয়তো এটিকে রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।"
মুমু ২