ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাফল্যের রহস্য জানালেন ওজনিয়াকি

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ১ নভেম্বর ২০১৭

সাফল্যের রহস্য জানালেন ওজনিয়াকি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আট বছর আগে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ডব্লিউটিএ ফাইনালসে খেলেছিলেন। বিদায় নিতে হয়েছিল সেমিফাইনাল থেকে। পরের বছর বিশ্বের এক নম্বর খেলোয়াড় হিসেবে আবার এই মর্যাদার আসরে খেলে ফাইনালে কিম ক্লিস্টার্সের কাছে হেরে গিয়েছিলেন। দীর্ঘ ৭ বছর পর তৃতীয়বারের মতো মৌসুম সমাপ্তির এ সেরা তারকাদের টুর্নামেন্টে খেলতে নেমেই সফল হলেন। ২৭ বছর বয়সী ক্যারোলিন ওজনিয়াকি নিজের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্টে শিরোপা জিতলেন। র‌্যাঙ্কিংয়েও দীর্ঘদিন পর সেরা তিনে উঠে এসেছেন। আর এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ বিরতি। গত বছর ইনজুরির কারণে অনেকদিন এ ডেনিশ তারকা বাইরে ছিলেন টেনিস কোর্টের। সেই বিরতিটাই তাকে মানসিকভাবে আরও চাঙ্গা করেছে, মনোবল বাড়িয়েছে এবং আত্মবিশ্বাসীও হয়েছেন। সে কারণেই এই সাফল্য এসেছে বলে দাবি করেছেন ওজনিয়াকি। গত বছরের শুরুর দিকে গোড়ালির ইনজুরিতে পড়েছিলেন ওজনিয়াকি। এরপর ১০ সপ্তাহ থাকতে হয়েছিল টেনিস থেকে দূরে। যখন ফিরেছেন র‌্যাঙ্কিংয়ে ৭৪ নম্বরে অবস্থান ছিল তার। ফেরার পর থেকেই দারুণ নৈপুণ্য দেখাতে শুরু করেন তিনি। এ বছর ৬টি ডব্লিউটিএ আসরের ফাইনাল খেলেছেন কিন্তু শিরোপা জিততে পারেননি। অবশেষে প্যান প্যাসিফিক ওপেনে খরা কাটিয়ে শিরোপা জেতেন। এমন নৈপুণ্যের কারণেই র‌্যাঙ্কিংয়ে বেশ দ্রুতই সেরা দশে উঠে আসেন। বছর সমাপ্তির ইভেন্ট ডব্লিউটিএ ফাইনালসে তিনি জায়গা করে নেন র‌্যাঙ্কিংয়ের ৬ নম্বরে থেকে। আর এবারই ক্যারিয়ারের সেরা সাফল্য পেলেন তিনি। ২০০৯ ও ২০১০ সালে টানা দুটি ডব্লিউটিএ ফাইনালসে খেলে জিততে পারেননি। কোন গ্র্যান্ডস্লাম না জিতলেও ২০১০ সালে ক্যারিয়ারে প্রথমবার র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে উঠে পরের বছর পর্যন্ত সেটা ধরে রেখেছিলেন। শুধু ২০০৯ ও ২০১৪ সালের ইউএস ওপেনের ফাইনাল খেলাই ছিল সেরা সাফল্য। পেশাদার টেনিস ক্যারিয়ার শুরুর ১২ বছর পর অবশেষে সবচেয়ে বড় এবং মর্যাদার কোন টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হতে পারলেন। এবার সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত ডব্লিউটিএ ফাইনালসে তিনি ভেনাস উইলিয়ামসকে হারিয়ে এ কৃতিত্ব দেখান। প্রথমবারের মতো ভেনাসের বিরুদ্ধেও জয় তুলে নিয়েছেন তিনি ৮ বারের মোকাবেলায়। ২৭ বছর বয়সী ওজনিয়াকির এটি ২৭তম ডব্লিউটিএ শিরোপা। ইনজুরিতে দীর্ঘ সময় কোর্টের বাইরে থেকে ভাল কিছু করার প্রতি ক্ষুধাটা বেড়ে গিয়েছিল তার। এমনটাই জানালেন এবার এ সাফল্যের কারণ হিসেবে। তিনি বলেন, ‘আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি সবকিছুই ঘটে কোন একটা কারণে। হয়তো আমি এ পর্যন্ত আসতেই পারতাম না যদি ইনজুরিটা না হতো। আমার মনে হয় টেনিস থেকে বিরতিটাই আমার জন্য দারুণ কিছু ছিল। আমি তখন বাড়িতে থাকতে পেরে খুবই ভাল বোধ করছিলাম এবং সাধারণ কাজকর্ম করছিলাম। বিন্দুমাত্র টেনিস বল স্পর্শ না করে থাকার সে সময়টা সত্যিই খুব দারুণ ছিল। যখন আমি অনুভব করেছি যে আমি প্রস্তুত তখনই ফিরে এসেছিলাম এবং তারপর থেকে খেলাটাকে খুবই উপভোগ করেছি।’ এবার এই আসরেও ক্যারোলিন গার্সিয়ার কাছে হেরে গিয়েছিলেন, কিন্তু অপর দুই ম্যাচ জেতার কারণে সেমিফাইনালে ওঠেন। তারপর আর কেউ থামাতে পারেননি ওজনিয়াকিকে। এখন তিনি উঠে এসেছেন র‌্যাঙ্কিংয়ের তিন নম্বরে। ২০১১ সালের পর এটাই তার সেরা অবস্থান। মূলত গত মাসে টোকিওতে অনুষ্ঠিত প্যান প্যাসিফিক ওপেনে শিরোপা জয়টাই তাকে আরও উজ্জীবিত করেছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় আক্রমণাত্মক মনোভাব ধরে রাখার ক্ষেত্রে আমি সফল হয়েছি। এমনকি যারা সাধারণত বিগ হিটার হিসেবে পরিচিত তাদের সঙ্গেও আমি তেমন তালগোল পাকিয়ে ফেলিনি। এটাই হতে পারে আমার সাফল্যের কারণ। আমি এখন নিজের মধ্যে খুব শান্তি বোধ করছি।’
×