ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আত্মঘাতী পাকিস্তান

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

আত্মঘাতী পাকিস্তান

আবারও নিজস্ব সৃষ্ট সন্ত্রাসী হামলায় রক্তাক্ত হলো পাকিস্তান। বিশ্ব যতই প্রয়োগ করুক চাপ, জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদ বিস্তারে তবুও বিদ্যমান তার লাফঝাঁপ। মানুষ হত্যা করেও চায়নি কখনও মাফ, তাই বিশ্ববাসীর কুড়ায় সে ঘৃণা ও অভিশাপ। নাশকতার যত রকম আছে কলা কৌশল, সবই সে করে প্রয়োগ, নৃশংসতার বীজ বপন করে ছড়ায় জঙ্গী রোগ। তাই কারও মৃত্যুতে, জখমে জাগে না কোন শোক। বিশ্বের দেশে দেশে মানুষের রক্তপাতে তাই সক্রিয় আজও পাকিস্তান নামক অকার্যকর সন্ত্রাসী রাষ্ট্রটি। এরাই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ ঘটিয়েছিল এই বাংলাদেশে। অভিশপ্ত দেশটিকে বাংলার মানুষ দেখে ঘৃণার চোখে। গণহত্যার জন্য তারা ক্ষমাও চায়নি। বরং তাদের গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে বাংলাদেশে নাশকতা চালিয়ে এসেছে দিনের পর দিন। বাংলাদেশ ও ভারতে যত সন্ত্রাসী কর্মকা- ঘটে এবং যেসব জঙ্গীরা জড়িত, তারা সবাই পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের প্রশিক্ষিত। অর্থ ও অস্ত্র বলও তারাই সরবরাহ করে। পাকিস্তান নামক সামরিক জান্তা কবলিত দেশটির গোটা অঞ্চল জুড়েই জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের বিকাশ ও বিস্তার ঘটেছে। পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ বিকাশে সহায়ক শক্তি যুক্তরাষ্ট্রও এখন পাকিস্তানীদের ওপর নাখোশ। সন্ত্রাসবাদকে মদদ দেয়ার প্রশ্নে পাকিস্তানের যে অঘোষিত রাষ্ট্রীয় নীতি রয়েছে, তা মোটেই ভালভাবে নেয়নি নতুন মার্কিন প্রশাসন। অতীতেও মার্কিন প্রশাসন এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার পরও পাকিস্তানকে অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছে, যে অস্ত্র ও টাকা পরে ব্যবহার হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও জঙ্গী হামলায়। আফগানিস্তানকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান তালেবান নামক জঙ্গী সংগঠন গড়ে তোলা, প্রশিক্ষণ এবং হামলার জন্য সার্বিক সহায়তা দিয়ে আসছিল। পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত এসব তালেবান ও তাদের সমর্থকরা পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তের উপজাতীয় অঞ্চলে ক্ষমতাসীন আফগান সরকার, ন্যাটো সেনাবাহিনী এবং ন্যাটো পরিচালিত ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি ফোর্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। পাকিস্তান ‘ভাল তালেবান ও খারাপ তালেবান’ হিসেবে সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করলেও নিজ দেশে তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে আসছে। এ ছাড়া লস্করই তৈয়বা, জঈশ-এ-মুহম্মদসহ আরও জঙ্গী সংগঠন পাকিস্তানী সেনা মদদে সন্ত্রাস চালাচ্ছে নিজ দেশে ও ভারতেও। মুফতি এজাহার শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে বিশ্বে পরিচিত হলেও পাকিস্তান তা মানে না। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরেও জঙ্গী প্রশিক্ষণ চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। পরের জন্য পাতা ফাঁদে পাকিস্তান প্রায়শই ধরা পড়ছে। তাই সেনা সদরেও জঙ্গী হামলার ঘটনা ঘটছে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ও এদের নাশকতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। সর্বশেষ সিন্ধু প্রদেশের সেহওয়ান শহরের লালশাহবাজ কালান্দার মাজারে হামলা চালালে ৮০ জন নিহত ও আড়াই শতাধিক আহত হয়েছে। সুফি সংস্কৃতির আচার ‘ধামাল’ চলার সময় আত্মঘাতী গ্রেনেড হামলা চালায় এক যুবক। এই মাজারকে কেন্দ্র করে উপমহাদেশেও গান রয়েছে, ‘দমাদম মাস্ত কালান্দার’। এই হামলার দায় আইএস তাদের মুখপত্রে স্বীকার করলেও পাকিস্তান এ জন্য আফগানকে দায়ী করে বলছে, এই সন্ত্রাসী কর্মকা- বৈরী শক্তির নির্দেশে এবং আফগানিস্তানের নিরাপদ আস্তানা থেকে ঘটানো হয়েছে। একই কায়দায় এর আগে গত বছরের নবেম্বরে বেলুচিস্তানে একটি সুফি মাজারে একই কায়দায় হামলায় ৫২ জন নিহত হয়। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের উৎসকেন্দ্র পাকিস্তান ও তাদের সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরে আগুন নিয়ে খেলছে। এই আগুনে তারা নিজেরাই পুড়ে মরবে নিশ্চিত। উপমহাদেশে এমন একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের অবস্থান বাংলাদেশের জন্যও বিপজ্জনক। তাই পাকিস্তানকে জঙ্গী উৎপাদন বন্ধে বিশ্ববাসীকে চাপ প্রয়োগ করতে হবে।
×