ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থের লোভে পিএসজিতে যাবেন মেসি-রোনাল্ডো!

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫

অর্থের লোভে পিএসজিতে যাবেন মেসি-রোনাল্ডো!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টাকায় কি না হয়! কথায় আছে- ‘টাকায় বাঘের দুধ পাওয়া যায়।’ বর্তমান সময়ের সেরা দুই ফুটবলার লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনল্ডোকেও নাকি অর্থের ঝনঝনানির লোভ দেয়া হচ্ছে! ফরাসী ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন (পিএসজি) যে কোন মূল্যে এই দুই তারকাকে দলে ভেড়াতে মরিয়া বলে গুঞ্জন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে। অনেকদিন থেকেই চাউর হচ্ছে, মেসি বার্সিলোনা ও রোনাল্ডো রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়তে পারেন। এক্ষেত্রে দুই তারকারই সম্ভাব্য নতুন ঠিকানা হিসেবে পিএসজির নাম শোনা গেছে। আরও একবার এমন কথা শোনা গেল। এবার মেসির ঠিকানা পরিবর্তনের কথা জানিয়েছেন তার আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের সতীর্থ এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। মারিয়ার বিশ্বাস বর্তমান ক্লাব পিএসজির মেসিকে কেনার মতো সামর্থ্য আছে। মেসি অবশ্য অনেকবারই বলেছেন, ন্যুক্যাম্পে তিনি সুখে আছেন। তবে মাঝে মধ্যে হতাশার কথাও উচ্চারিত হয়েছে। তবে ডি মারিয়া মনে করছেন, পিএসজি পারবে মেসিকে প্যারিসে নিয়ে আসতে। এ জন্য যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা প্রয়োজন, তা করার সামর্থ্য রাখে তার ক্লাব। ফরাসী স্পোর্টস বিষয়ক এক ওয়েবসাইটে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ডি মারিয়া বলেন, আমি আশা করি পিএসজিই পারবে মেসিকে প্যারিসে নিয়ে আসতে। কিভাবে সম্ভব? এ প্রসঙ্গে সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ তারকা বলেন, সব কিছুই সম্ভব, টাকা হলে। মেসির মতো ফুটবলারকে নিয়ে আসতে হলে প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে অর্থ। আর আমার বিশ্বাস, পিএসজির সে সামর্থ্য আছে। আর আমিও খুব খুশি হব, যদি মেসিকে লীগ ওয়ানে নিয়ে আসতে পারি। ২০০৮ সাল থেকে জাতীয় দলের হয়ে একই জার্সিতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে খেলছেন মেসি ও মারিয়া। তবে ক্লাব পর্যায়ে এখনও দু’জনই এক সঙ্গে মাঠে নামতে পারেননি। সেই স্বপ্ন এখন বুনতে শুরু করেছেন এ্যাটাকিং এই মিডফিল্ডার। রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে ডি মারিয়া প্রথমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, এরপর চলে আসেন পিএসজিতে। আর মেসি ক্লাব ক্যারিয়ারের প্রথম থেকেই আছেন বার্সিলোনায়। বার্সার একাডেমি লা মাসিয়া থেকে বেড়ে ওঠা মেসির ইয়ুথ এবং সিনিয়র ক্যারিয়ার সব ন্যুক্যাম্পকে ঘিরেই। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, তিনি বর্তমানে রিয়ালে সুখেই আছেন। আপাতত সান্টিয়াগো বার্নাব্যু ছাড়ার কোন পরিকল্পনা তার নেই। তবে ভবিষ্যতে তিনি প্যারিসে আস্তানা গাড়তে পারেন বলেও আভাস দিয়েছেন। রোনাল্ডো বলেন, আমি মাদ্রিদকে পছন্দ করি প্যারিসের চেয়েও। কিন্তু একদিন পরিবর্তন হতেও পারে। প্যারিসের প্রশংসা করে সি আর সেভেন বলেন, আমার পরিবার প্যারিসে কাজ করে। কিন্তু আমার চিন্তায় সেখানে বসবাস করার ইচ্ছা নেই। এটা দারুণ একটা শহর, আমি সেখানে গিয়েছি কয়েকবার। তবে অনেকেই বলছেন, অর্থের পরিমাণটা লোভনীয় হলে সি আর সেভেনও মাদ্রিদ ছেড়ে প্যারিসে চলে যেতে পারেন। রোনাল্ডো হোটেল ব্যবসায় নামার ঘোষণা দিয়েছেন। এ জন্য চার কোটি ডলারেরও বেশি বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছেন তিনি। ‘সি আর সেভেন’ এখন একটা বিখ্যাত ব্র্যান্ড। ‘সি আর সেভেন’ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর আদ্যাক্ষর আর ‘সেভেন’ তার জার্সি নম্বর। এই ব্র্যান্ডকে পুঁজি করেই হোটেল ব্যবসায় নামতে যাচ্ছেন তিনবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার। সাক্ষাতকারে এ প্রসঙ্গে রোনাল্ডো বলেন, অনেক ফুটবলারই কী করতে চান, তা না জেনেই তাদের ক্যারিয়ারের ইতি টানেন। তবে আমার কাছে এটা পরিষ্কার। আমি আমার ব্র্যান্ডকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। ৩০ বছর বয়স হলেও আমার হাতে এখনও অনেক বিকল্প আছে। আমার দিকে অনেকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। সে জন্য আমি সত্যিই আনন্দিত। আমি শুধু চাই, যেখানেই কাজ করি না কেন, সব সময় আমার নাম যেন সেরাদের তালিকায় থাকে। রোনাল্ডোর ইচ্ছাপূরণে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে পর্তুগালের বিখ্যাত হোটেল গ্রুপ পেস্টানা। ‘সি আর সেভেন’ নামে হোটেলগুলো নির্মিত হতে যাচ্ছে রোনাল্ডোর জন্মস্থান ফুনশাল, লিসবন, মাদ্রিদ আর নিউইয়র্কে। পর্তুগালের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় দ্বীপপুঞ্জ মাদাইরার রাজধানী ফুনশাল। রোনাল্ডোর মতো পেস্টানা হোটেল গ্রুপও মাদাইরা থেকে উঠে এসেছে। খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছালেও রোনাল্ডো তার শেকড়কে ভুলে যাননি। তাই হোটেল ব্যবসায় নেমেই পর্তুগীজ অধিনায়ক বলেছেন, মাদাইরা আমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎপত্তিস্থল। তাই প্রথম প্রকল্পটা হবে মাদাইরাতেই। সেখানেই আমাদের পরিবারের শেকড় জড়িয়ে। রোনাল্ডোর প্রথম হোটেল উদ্বোধন হতে পারে আগামী বছরের গ্রীষ্মে। ২০১৬ সালেই পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে রোনাল্ডোর দ্বিতীয় হোটেল শুরু হতে পারে। পরের বছর মাদ্রিদে তৃতীয় হোটেল উদ্বোধন করতে পারেন তিনি। পরের হোটেলটি হতে পারে নিউইয়র্কে। আচমকা হোটেল ব্যবসায়ে নামা প্রসঙ্গে রোনাল্ডো বলেন, ফুটবলই আমার পৃথিবী। তবে জীবনে পরিবর্তনও আসছে। তা ছাড়া আমি সব সময়ই হোটেলের মালিক হতে চেয়েছি।
×