ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বার্সিলোনা সেমির পথে, বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে বেয়ার্ন

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ১৭ এপ্রিল ২০১৫

বার্সিলোনা সেমির পথে, বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে বেয়ার্ন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বার্সিলোনা সেমিফাইনালে এক পা দিয়েছে, আর বিদায়ের সন্নিকটে বেয়ার্ন মিউনিখ। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগের ম্যাচ শেষের চিত্র ঠিক এমন। বুধবার রাতে প্যারিসে স্বাগতিক ফরাসী ক্লাব পিএসজিকে ৩-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে অতিথি বার্সা। আরেক ম্যাচে স্বাগতিক পর্তুগীজ ক্লাব পোর্তো ৩-১ গোলে জার্মান পরাশক্তি বেয়ার্নকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করেছে। আগামী ২১ এপ্রিল শেষ আটের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটি তাই বেয়ার্ন মিউনিখ ও পিএসজির জন্য অগ্নিপরীক্ষা। সেমিতে খেলতে হলে অনেকটা অসাধ্যই সাধন করতে হবে দল দুটিকে। পার্ক ডি প্রিন্সেসে স্বাগতিক পিএসজির বিরুদ্ধে শুরু থেকেই জ্বলে ওঠেন সফরকারী দলের তিন তারকা লিওনেল মেসি, নেইমার ও লুইস সুয়ারেজ। আর তাতেই উড়ে যায় লরেন্ট ব্লাঙ্কের দল। ম্যাচটি নিজের করে নেন বার্সার সুয়ারেজ। উরুগুইয়ান এই স্ট্রাইকার করেন জোড়া গোল। ম্যাচে তারকা স্ট্রাইকার জ¬াতান ইব্রাহিমোভিচকে ছাড়াই খেলতে নামে পিএসজি। সেই সঙ্গে ফরাসী লীগ ওয়ানের চ্যাম্পিয়নদের জন্য দুঃসংবাদ হয়ে আসে ম্যাচের শুরুর দিকেই অধিনায়ক থিয়াগো সিলভার চোট। তার বদলে খেলতে নামা আরেক ব্রাজিলিয়ান ডেভিড লুইজও তেমন কিছুই করতে পারেননি। উল্টো দলের দুটি গোল হজমে আছে তার দায়। ইউরোপীয় পর্যায়ের আসরে নিজেদের মাঠে ৩৩ ম্যাচ পর হারের স্বাদ পেয়েছে পিএসজি। ম্যাচের ১৪ মিনিটে প্রথম ভাল সুযোগ পায় বার্সা। সুয়ারেজ দারুণ এক পাস দিয়েছিলেন মেসিকে। কিন্তু আর্জেন্টাইন অধিনায়কের বাঁ পায়ের শট গোলপোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ১৮ মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে গোল করে এগিয়ে যায় কাতালানরা। ইনিয়েস্তার কাছ থেকে বল পেয়ে খানিকটা এগিয়ে মেসি বল বাড়ান বাঁ দিকে অনেকটা ফাঁকায় থাকা নেইমারকে। ডান পায়ের শটে গোল করেন ব্রাজিলিয়ান অধিনায়ক। এ নিয়ে পিএসজির বিরুদ্ধে চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের তিন ম্যাচেই গোল পেলেন নেইমার। বিরতির পর শুরু হয় সুয়ারেজ জাদু। ৬৭ মিনিটে দারুণ নৈপুণ্যে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন তিনি। ডিফেন্ডার লুইজকে পায়ের জাদুতে ছিটকে ফেলে ডান দিক থেকে ডি বক্সে ঢুকে আরও দুইজনকে ফাঁকি দিয়ে গোলরক্ষক সালভাতোরে সিরিগুকে পরাস্ত করে লক্ষ্যভেদ করেন কামড় কা-ে বিতর্কিত এই তারকা। ৭৯ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় ও দলের তিন নম্বর গোল করেন সুয়ারেজ। এবারও লুইজকে বোকা বানিয়ে গোল করেন তিনি। এ নিয়ে শেষ ১৫ ম্যাচে ১৩ গোল করলেন উরুগুয়ের এই তারকা। ৮২ মিনিটের সান্ত¡নার এক গোল করে পিএসজি। ভ্যান ডার ভিলের শট ডিফেন্ডার ম্যাথিউর পায়ে দিক পাল্টে জালে প্রবেশ। ম্যাচে আত্মঘাতী এই গোলটিই স্বাগতিকদের জন্য সান্ত¡না। ম্যাচ সুয়ারেজের প্রথম গোলটি বার্সিলোনার হয়ে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার ১০০০ গোল। পরে সাবেক লিভারপুল তারকা আরও একটি গোল করলে বার্সার গোলসংখ্যা হয় ১০০১। এর ফলে বার্সা ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে। এ তালিকায় শীর্ষে আছে ১০১৬ গোল করা রিয়াল মাদ্রিদ। আর তালিকার পরের দুটি অবস্থানে আছে যথাক্রমে জার্মান ক্লাব বেয়ার্ন মিউনিখ (৮২৩) ও ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাস (৭৪৮)। নিজেদের মাঠে শুরু থেকেই অতিথি বেয়ার্নের উপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে পোর্তো। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে এগিয়েও যায় স্বাগতিকরা। পোস্টের কাছেই বেয়ার্ন গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নিউয়ের ফাউল করেন প্রতিপক্ষের জ্যাকসন মার্টিনেজকে। হলুদ কার্ড তো দেখেনই, সেই সঙ্গে পেনাল্টিও পায় পোর্তো। স্পট কিক থেকে গোল করে স্বাগতিকদের এগিয়ে নেন স্ট্রাইকার রিকার্ডো কুয়ারেসমা। এই কুয়ারেসমাই ম্যাচের দশম মিনিটে আরও একটি চোখ ধাঁধানো গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। চোটের কারণে মাঠের বাইরে থাকা ফ্রাঙ্ক রিবেরি, বাস্তিয়ান শোয়াইনস্টাইগার ও আরিয়ান রোবেনের অভাব ভালমতোই টের পায় বুন্দেসলিগার চ্যাম্পিয়নরা। ম্যাচের ২৮ মিনিটের মিডফিল্ডার থিয়াগো আলকান্টারা গোল করলে ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেয় পেপ গার্ডিওলার দল। কিন্তু বিরতির পর ৬৫ মিনিটে পোর্তোর হয়ে জ্যাকসন মার্টিনেজ তিন নম্বর গোল করলে সব আশা শেষ হয়ে যায় বেয়ার্নের। বাদবাকি সময় প্রাণান্ত প্রচেষ্টা করেও ব্যবধান কমাতে পারেন বাভারিয়ানরা। ফলে বাদ পড়ার শঙ্কা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে আসরের সাবেক চ্যাম্পিয়নদের।
×