ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২

গাইবান্ধা জেলায় অবৈধ ডায়াগনস্টিকের রাজত্ব—বন্ধ হলো ৪টি, বাকিগুলো কোথায় লুকানো?

শামসুর রহমান হৃদয়, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, গাইবান্ধা

প্রকাশিত: ১৮:৫৯, ২৯ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৯:০০, ২৯ জুলাই ২০২৫

গাইবান্ধা জেলায় অবৈধ ডায়াগনস্টিকের রাজত্ব—বন্ধ হলো ৪টি, বাকিগুলো কোথায় লুকানো?

ছবি: জনকণ্ঠ

গাইবান্ধা জেলায় অনুমোদনহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ছড়াছড়ি, আর তাতেই প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা। দীর্ঘদিন ধরে অবাধে চালানো এসব প্রতিষ্ঠান এখন জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে অবশেষে জেলাজুড়ে এমন অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

আজ মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে জেলা শহরের চারটি অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করেছে গাইবান্ধা সিভিল সার্জন কার্যালয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. রেজওয়ান আহম্মেদ। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. রফিকুজ্জামান।

সিলগালা হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো:
নিউ সেন্টাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার (হাসপাতাল রোড),
ক্রিসেন্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টার (কাচারি বাজার),
সোনার বাংলা ডায়াগনস্টিক সেন্টার (কলেজ রোড),
ফাতেমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার (তুলশীঘাট বাজার),

এসব সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ—কোনরকম বৈধ অনুমোদন ছাড়াই চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিল তারা। শুধু তাই নয়, অভিযানকালে মেয়াদোত্তীর্ণ কীট ও অকেজো পরীক্ষা সরঞ্জামের ছড়াছড়িও ধরা পড়ে।

ডা. রেজওয়ান আহম্মেদ জানান, “আমরা নিয়মিত মনিটরিং চালিয়ে যাচ্ছি। যারা জনগণের জীবন নিয়ে খেলা করছে, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”

একজন ভুক্তভোগী বলেন, “আল্ট্রাসোনোগ্রাম করাতে গিয়েছিলাম, রিপোর্টেই ভুল ছিল। পরে চিকিৎসকের সন্দেহ হলে অন্য সেন্টার থেকে আবার করাতে হয়।”

সুশীল সমাজের অনেকেই বলছেন, “ডায়াগনস্টিক ব্যবসায় একটি সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। সঠিক মানের ল্যাব না থাকা, অদক্ষ টেকনিশিয়ান, আর চিকিৎসকের উপস্থিতি না থাকা—এসব মিলিয়ে যেন মৃত্যুর ফাঁদ এসব সেন্টার।”

গাইবান্ধা সদর ছাড়াও সুন্দরগঞ্জ, পলাশবাড়ী, গোবিন্দগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও সাদুল্লাপুরসহ সাতটি উপজেলার প্রায় প্রতিটিতে রয়েছে এ ধরনের অসংখ্য অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টার। কিন্তু এখনো সেগুলোর বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

স্থানীয়দের দাবি, প্রতিটি উপজেলায় নিয়মিত অভিযান চালিয়ে এই অনিয়মের চক্র ভেঙে দিতে হবে। রোগীরা চান—ভালো মানের যন্ত্রপাতি ও দক্ষ প্যাথলজিস্টের মাধ্যমে পরীক্ষা করাতে।

গাইবান্ধায় অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তবে এটিই শেষ নয়। এমন অভিযান নিয়মিত চালিয়ে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় আরও জোরালো ভূমিকা রাখার দাবি জানাচ্ছেন সচেতন মহল।

আবির

আরো পড়ুন  

×