
ছবি: সংগৃহীত
পায়রা বন্দরের শেষ বয়ার কাছাকাছি গভীর সাগর থেকে ভাসমান অবস্থায় চারদিন পর ১০ জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাত তিনটার পর আরেকটি ট্রলারের জেলেরা তাদের উদ্ধার করে কলাপাড়া হাসপাতালে নিয়ে যান। এদের মধ্যে তিনজন—রাজিব (২৫), রাহাত (৩০) এবং রফিক মৃধা (৪০)—এর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি সাতজন বর্তমানে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
উদ্ধার হওয়া জেলেদের বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়া, আমতলী ও নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন এলাকায়। নিখোঁজ রয়েছেন ওই ট্রলারে থাকা আরও পাঁচজন জেলে। তাদের মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বেঁচে ফেরা জেলে হারুন (২৭)। ট্রলারের মাঝি আব্দুর রশিদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা এখনো জানা যায়নি।
জেলে হারুন জানান, গত বুধবার সকালবেলা ‘সাগর কন্যা’ কোম্পানির ট্রলার নিয়ে ১৫ জন জেলে সাগরে মাছ ধরতে যান। পায়রা বয়ার কাছেই জাল ফেলেন এবং প্রায় দুই হাজার ইলিশ ধরেন। কিন্তু শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ করে বিশাল এক ঢেউ এসে ট্রলারের পেছনে আঘাত হানে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ট্রলারটি আংশিক ভেঙে যায়। তিনি বলেন, “পেছনের অংশ ভাইঙ্গা পড়লে বাবুর্চি চাপা পড়ে মারা যায়। জালের মধ্যে প্যাঁচিয়ে আরেকজন ডুবে যায়। আমরা বয়া ও ফ্লোট ধরে ভাসতে থাকি। তিনদিন পর ক্লান্ত হয়ে আরও দুইজন মারা যায়। একসময় আলমগীরের ট্রলার এসে আমাদের উদ্ধার করে।”
উদ্ধারপ্রাপ্ত জেলেরা বর্তমানে নিউমোনিয়া, ক্লান্তি ও পানিশূন্যতায় ভুগছেন। তাদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা নিশ্চিত করা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।
কলাপাড়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসীন সাদেক জানান, তিনি হাসপাতালে গিয়ে জেলেদের চিকিৎসার খোঁজখবর নিয়েছেন এবং নিখোঁজ ও নিহতদের বিষয়েও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজরদারি রাখা হচ্ছে। জেলেপল্লীর পরিবারগুলো এখন শোক আর উৎকণ্ঠায় সময় কাটাচ্ছে।
আসিফ