
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কালীগঞ্জ ইউনিয়নের কাপালীপাড়ায় ঘটে গেল এক অদ্ভুত, শোকাবহ ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা। ঘরের মেঝেতে ইঁদুরের গর্তে লুকানো বিষধর সাপ ধরতে গিয়ে প্রাণ হারান অভিজ্ঞ সাপুড়ে বয়েজ উদ্দিন। সাপের ছোবলে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। তবে মৃত্যুর আগে তিনি বিষধর সাপটিকে ধরতে সক্ষম হন এবং সেটিকে একটি বস্তায় বন্দি করেন।
এই খবর মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়লে, নিহত সাপুড়ের সহকর্মী ও সুপরিচিত 'সাপখেকো' মোজাহার আলী ছুটে আসেন তার বাড়িতে। মৃতদেহ দেখে পরিবারকে নিশ্চিত করেন বয়েজ উদ্দিন আর নেই। এরপর তিনি মৃতদেহের পাশে থাকা বস্তাবন্দি সাপ ও সাপের বাচ্চাগুলো নিয়ে রওনা হন। পথিমধ্যে কচাকাটার গাবতলা বাজারে জড়ো হয় শত শত মানুষ। সবাই দেখতে চায় সেই ভয়ংকর সাপটিকে, যে ছোবলে প্রাণ গেছে বয়েজ উদ্দিনের। উপস্থিত জনতা, দীর্ঘদিন ধরে সাপ, ব্যাঙ, পোকামাকড় খেয়ে জীবনযাপনকারী মোজাহার আলীকে অনুরোধ করেন প্রয়াত সাপুড়ের প্রতিশোধ নিতে যেন তিনি সেই সাপটিকেই জীবন্ত খেয়ে ফেলেন।
সবার চোখের সামনে মোজাহার আলী এক মুহূর্তের জন্যও দ্বিধা করেননি। দুঃখ, রাগ ও প্রতিশোধ মিশ্রিত আবেগে তিনি বস্তার মুখ খুলে বিষধর সাপটিকে বের করেন। তারপর সহস্রাধিক দর্শকের সামনে সেই সাপটিকে কামড়ে, চিবিয়ে, রক্তসহ গিলে ফেলেন। অনেকে এমন দৃশ্য আগে কখনো দেখেননি।
বয়েজ উদ্দিনকে যখন কবর দেওয়া হচ্ছিল, ঠিক তখন বাজারে চলছিল এক ব্যতিক্রমী প্রতিশোধের ঘটনা। উপস্থিত এলাকাবাসী মনে করছেন এই যেন মৃত্যুর জবাবে মৃত্যু, বিষের বিরুদ্ধে বিষ! মোজাহার আলীর এমন দুঃসাহসিক কাজে বিস্ময়ের পাশাপাশি অনেকে প্রশংসা ও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
আফরোজা