
ছবি: সংগৃহীত
বর্তমানে অধিকাংশ শিশুর হাতে স্মার্টফোন বা ট্যাব থাকা যেন স্বাভাবিক চিত্র হয়ে উঠেছে। পড়াশোনার অজুহাতে শুরু হলেও ধীরে ধীরে তারা আসক্ত হয়ে পড়ে ইউটিউব, গেমস, সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মে। এটি শিশুর মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করেছেন শিশুমনোবিদরা।
বাংলাদেশ শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের শিশু বিকাশ বিশেষজ্ঞ ডা. সায়েদা আফরোজা বলেন, “অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইমে শিশুর ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে, মনোযোগ কমে, চোখে সমস্যা হয় এবং ধীরে ধীরে তারা সমাজবিমুখ হয়ে পড়ে।”
কেন বিপজ্জনক মোবাইল আসক্তি?
- ঘুমের ব্যাঘাত: রাতে ঘুমাতে দেরি হওয়া ও কম ঘুম।
- মেজাজ খিটখিটে হওয়া: বিশেষ করে মোবাইল না পেলে রাগ করা, কান্নাকাটি।
- সামাজিক দূরত্ব: খেলাধুলা বা আড্ডার পরিবর্তে একা মোবাইল ব্যবহার।
- শিক্ষায় বিঘ্ন: পড়াশোনায় মনোযোগ না থাকা, নম্বর কমে যাওয়া।
- স্বাস্থ্যঝুঁকি: চোখের সমস্যা, মাথাব্যথা, ওবেসিটি।
কীভাবে কমাবেন শিশুর মোবাইল আসক্তি?
১. নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করুন:
প্রতিদিন মোবাইল ব্যবহারের একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে দিন (যেমন: ১ ঘণ্টা), এবং সেটি মেনে চলতে অভ্যস্ত করুন।
২. বিকল্প বিনোদনের ব্যবস্থা করুন:
শিশুর হাতে মোবাইল না দিয়ে পাজল, বই, আঁকাআঁকি, কাগজে কাটাকুটি, ঘরোয়া খেলা, বা বাগানে সময় কাটানোর সুযোগ দিন।
৩. শিশুর সঙ্গে সময় কাটান:
মোবাইল দিয়ে সময় পার না করে বাবা-মা যদি নিজেই গল্প বলেন, খেলেন কিংবা ঘুরতে নিয়ে যান—তাহলে শিশুর মোবাইল চাহিদা কমবে।
৪. স্ক্রিন টাইম মনিটরিং অ্যাপ ব্যবহার করুন:
Google Family Link বা অন্যান্য অভিভাবক নিয়ন্ত্রণ অ্যাপ দিয়ে কোন অ্যাপ কতক্ষণ ব্যবহার করছে, তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
৫. রাতের ঘুমের আগে মোবাইল নয়:
ঘুমের অন্তত ১ ঘণ্টা আগে থেকে শিশুকে স্ক্রিন থেকে দূরে রাখুন।
৬. নিজেরাও উদাহরণ হোন:
অভিভাবকরা যদি মোবাইলে ব্যস্ত থাকেন, শিশুরাও সেটাই শিখবে। তাই সময় কাটান শিশুর সঙ্গে—not মোবাইল স্ক্রিনে।
শিশুদের হাতে দীর্ঘ সময় মোবাইল থাকা মানে মানসিক বিকাশে বাধা তৈরি হওয়া। অভিভাবকরা যদি সচেতন না হন, ভবিষ্যতে এটি এক ভয়াবহ আসক্তিতে রূপ নিতে পারে।
আঁখি