
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে উচ্চ রক্তচাপ (হাইপারটেনশন) একটি নীরব ঘাতক হিসেবে পরিচিত। সাম্প্রতিক স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণাগুলো বলছে, দিন শুরুর সঠিক অভ্যাস উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে বড় ভূমিকা। চিকিৎসকদের মতে, সকালের কয়েকটি সহজ অভ্যাস গ্রহণ করলেই ওষুধের ওপর নির্ভরতা কমানো সম্ভব।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের জন্য সকালে যে ৬টি কাজ অবশ্যই করা উচিত, তা নিচে তুলে ধরা হলো,
১. নিয়মিত ও একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠা
প্রতিদিন সকালে নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে উঠলে শরীরের ‘সার্কাডিয়ান রিদম’ বা জীবঘড়ি ঠিক থাকে। এতে মানসিক চাপ কমে এবং রক্তচাপ স্থিতিশীল থাকে। পর্যাপ্ত ঘুম (৬ থেকে ৮ ঘণ্টা) হাই ব্লাড প্রেসার কমাতে কার্যকর।
২. মেডিটেশন বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম (৫–১০ মিনিট)
সকালেই কয়েক মিনিট ধ্যান, গভীর শ্বাস নেওয়া বা মাইন্ডফুলনেস অভ্যাস স্ট্রেস হরমোন কমায়। এতে রক্তনালীগুলো আরাম পায় এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রায় থাকে।
৩. ২০–৩০ মিনিট হালকা ব্যায়াম বা হাঁটা
সকালবেলা নিয়মিত হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম হৃদপিণ্ডকে সচল রাখে এবং রক্তচাপ কমায়। যাদের বাড়ির বাইরে হাঁটা সম্ভব নয়, তারা ঘরের ভেতরে হাঁটাচলা বা স্ট্রেচিং করতে পারেন।
৪. স্বাস্থ্যকর সকালের নাস্তা গ্রহণ
সকালে পটাশিয়াম ও ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার যেমন ওটস, কলা, পেঁপে, বাদাম, ডিম (সিদ্ধ) ইত্যাদি খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। পাশাপাশি অতিরিক্ত লবণ ও প্রসেসড খাবার এড়িয়ে চলা জরুরি।
৫. এক গ্লাস গরম পানি পান
ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস গরম পানি শরীরকে হাইড্রেট রাখে এবং রক্ত চলাচল সহজ করে। এতে শরীর ডিটক্স হয় এবং রক্তচাপ কমে আসতে সাহায্য করে। ডাক্তারের পরামর্শে লেবুর রস বা মধুও মেশানো যেতে পারে।
৬. ওষুধ নিয়মমাফিক গ্রহণ ও প্রেসার মাপা
উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের সকালেই ওষুধ গ্রহণ জরুরি। একই সঙ্গে প্রতিদিন সকালে রক্তচাপ মেপে রাখলে চিকিৎসা সহজ হয় এবং বিপদ এড়ানো যায়।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অভ্যাসে বড় পরিবর্তন নয়
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “হঠাৎ করে ওষুধ বন্ধ করা বা বড় কোনো অভ্যাস পরিবর্তনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। তবে এই ৬টি অভ্যাস উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পরীক্ষিত এবং কার্যকর।”
প্রতিদিন সকালটাই হতে পারে আপনার সুস্থ জীবনের নতুন সূচনা। হাই ব্লাড প্রেসারকে ভয় না পেয়ে বরং সচেতন অভ্যাসের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণেই রাখা সম্ভব—এমনটাই বলছে সাম্প্রতিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের নানা গবেষণা।
ছামিয়া