
আফতাব উদ্দিন ওরফে আবির
শরীয়তপুরে ডামুড্যা পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের বিশাকুড়ি এলাকা থেকে নাশকতা ঘটানোর অভিযোগে আফতাব উদ্দিন ওরফে আবির (১৯) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে ডামুড্যা থানা পুলিশ।
ওই যুবকের বাসা থেকে বোমা তৈরির উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত যুবককে ঘিরে জঙ্গী সন্দেহে নানা ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। ওই যুবককে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা কল্পনা।
তবে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো: নজরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বাসা থেকে বোমা তৈরির উপাদান উদ্ধার করা হয়েছে। তবে আটককৃত যুবব জঙ্গী কিনা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয় নিয়ে কাজ করছে পুলিশ।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যায় ডামুড্যা থানার পুলিশ আফতাব উদ্দিন ওরফে আবির(১৯) নামের ওই যুবককে গ্রেফতার করে।
পুলিশ বলছে ওই যুবক কোন নাশকতার প্রস্তুতি নিচ্ছিল এমন খবরের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়েছে। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাকবাদে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হওয়ার কথা সে স্বীকার করছে। সোমবার ওই যুবক শরীয়তপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ডামুড্যা থানা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের কাছে প্রাথমিকভাবে ওই যুবক স্বীকার করেছে অনলাইনের মাধ্যমে যুক্ত থেকে সে জঙ্গিবাদে স্বেচ্ছায় উদ্বুদ্ধ (সেলফ মোটিভেটেড) হয়েছেন। বিভিন্ন ভিডিও দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। সে কিছু একটা করবে এমন চেষ্টা করছিল। তার আগেই পুলিশ তাকে ধরতে সক্ষম হয়েছে। তবে আইএস এর সাথে তার কোন যোগাযোগ আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
স্থানীয় ও ডামুড্যা থানা সূত্রে জানা যায়, ডামুড্যা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিশাকুড়ি এলাকার বাসিন্দা আফতাব উদ্দিন ওরফে আবির(১৯)। তিনি ডামুড্যা উপজেলা সদরের পূর্ব ডামুড্যা সরকারি কলেজ হতে চলমান এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। তার বাবা আব্দুল মালেক হাওলাদার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। এরপর তার মা নুরজাহান বেগমের সাথে সে বাড়িতে বসবাস করতেন।
পুলিশ আরো জানায়, পুলিশের কাছে তথ্য আসে আফতাব উদ্দিনের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে ও নাশকতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার সন্ধ্যায় আফতাবকে বাড়ির সামনের সড়ক হতে আটক করা হয়। এরপর ঢাকা হতে রাতে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল ডামুড্যায় আসে। তারা আফতাব উদ্দিনের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। ওই বাড়ি থেকে বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
পরেরদিন রবিবার ডামুড্যা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন বাদী হয়ে ২০০৯ সালের সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আফতাব উদ্দিনকে গ্রেফতার দেখিয়ে শরীয়তপুর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে উপস্থিত করা হয়। আদালতের বিচারকের কাছে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছেন। এরপর তাকে শরীয়তপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আফতাব উদ্দিনের বাড়িটি ডামুড্যা থানার ১০০ মিটার মধ্যে। একতলা একটি পাকা বাড়িতে মায়ের সাথে থাকেন। শনিবার সন্ধ্যায় সে বাড়ি থেকে বের হলে পুলিশ তাকে বাড়ির সামনের সড়ক হতে আটক করে।
বিষয়টি নিয়ে আফতাব উদ্দিনের পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ডামুড্যা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, ‘‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা আফতাব উদ্দিন নামের এক শিক্ষার্থীকে আটক করি। পরে তার বাড়ি তল্লাশি করলে বোমা তৈরির সরঞ্জাম পাওয়া যায়। পুলিশ বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করেছে। সেই মামলায় সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। জবানবন্দীতে সে কি বলেছেন তা তদন্তের স্বার্থে এই মূহুর্তে বলা যাবে না।’’
রাজু