ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৭ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

টাইগারদের টি২০ দল নিয়ে বিশ্লেষণ

জান-ই-আলম, ফ্রান্স থেকে

প্রকাশিত: ০০:৩৮, ৭ মে ২০২৫

টাইগারদের টি২০ দল নিয়ে বিশ্লেষণ

বাংলাদেশের টি২০ দলের অধিনায়ক লিটন দাস ও সহ-অধিনায়ক মেহেদি হাসান (ডানে)

আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চে পরবর্তী টি২০ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে। ভারত-শ্রীলঙ্কা যৌথ আয়োজক। মানে সময় বাকি প্রায় ৯ মাস। সদ্য ঘোষিত বাংলাদেশ টি২০ দলটা নির্বাচনের সময় নির্বাচকরা আশা করি ২০২৬ বিশ্বকাপকে মাথায় রেখেছিলেন। আপনি এই দলটাতে সত্যিকার অর্থে কোন কোন ক্রিকেটারকে মিস করছেন?
অবশ্যই আপনার প্রিয় ক্রিকেটার, ভক্ত আমিÑএসব আবেগ দূরে রেখে; বিশ্বকাপের কন্ডিশন, ফরম্যাটের চাহিদা, দলীয় কম্বিনেশন, ভারসাম্য, শক্তিমত্তার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরণের চিন্তায় নাম প্রস্তাব করবেন। বিশ্বকাপের আগে নানাবিধ কারণে টি২০ দলে একাধিক পরিবর্তন হতেও পারে। তবে কাঠামো হয়তো এমনই থাকবে।

নাঈম শেখের বাদ পড়া, দল নির্বাচনে নতুনত্ব নেই- এই মাপকাঠিতেই কমবেশি সমালোচনা হচ্ছে নির্বাচকদের। আগামী কয়েক সিরিজে নির্বাচকরা নিশ্চয়ই আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। আরও কিছু ক্রিকেটারকে সুযোগ দিবেন। 
আমিও বিসিবির প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর ঘোষিত দলে নতুনত্ব দেখিনি। চিরাচরিত রক্ষণাত্মক ছক। ভয় তাড়িয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টাও নেই। বরং অতীতের মতোই নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে হাঁটলেন। এমনিতেই এই ফরম্যাটে আমরা বড় দলগুলোর চেয়ে অনেক পিছিয়ে। খুদে সংস্করণের বারুদটাই যেন অনুপস্থিত। শৃঙ্খল ভাঙা, সামর্থ্যকে ভিন্নভাবে উপস্থাপনের চেষ্টাও আমরা করি না। আমার মনে হয়, জিসান আলমকে সুযোগ দেয়া যেত।

বিপিএল ভালো কাটেনি, এই মঞ্চের জন্য প্রস্তুত নয় এখনো; এমনটা বলতে পারেন। ইমার্জিং দলে আছে জিসান, সেটা খারাপ নয়। তবে টি২০ তো বাজির মতো, জিসানকে আরব আমিরাতের সঙ্গে বাজিয়ে দেখা যেত। আত্মবিশ্বাস পেলে, দলের সঙ্গে রেখে প্রস্তুত করা গেলে ওর বড় শট খেলার সামর্থ্য টপঅর্ডারে ফায়ার যোগ করত। একটু বেপরোয়া অস্ত্র দরকার আমাদের, কারো হাতে ফ্রি লাইসেন্স দিয়েই দেখুন না।
বেশি আর কী হবে, বিশ্বকাপ তো জিতে যাবো না! তবে অবশ্যই এমন কাউকে লাইসেন্স দিতে হবে, যার মধ্যে এসব ধুন্ধুমার পাগলামির সামর্থ্য ও সম্ভাবনা রয়েছে। নাম ধরেই বলছি, ১০ বছর আগে (২০১৬ বিশ্বকাপ) ভারতে টি২০ বিশ্বকাপ খেলা সৌম্য সরকারের চেয়ে তরুণ জিসানের পেছনে সময়-সিরিজ বিনিয়োগ করা বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত হতো।

পুপলার চয়েস হলেও আমার ভাবনায় মেহেদি হাসান মিরাজ নেই। কারণ আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এই ফরম্যাটে মিরাজের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর ক্রিকেটার শেখ মেহেদী। শেখ মেহেদীর সহ-অধিনায়ক হওয়া এবং তার পারফরম্যান্স ধারাবাহিক থাকলে মিরাজকে স্মরণ করার প্রয়োজন হবে না।
বাঁহাতি স্পিনে আমি নাসুম আহমেদকে মিস করছি এই দলে (হয়তো পরের সিরিজে সুযোগ পাবে)। তার অভিজ্ঞতা, ব্যাটিং সামর্থ্য দলে ভালো সংযোজন হতো, নতুন বলেও কার্যকর। এছাড়া রাকিবুল ছেলেটাও ছোট ফরম্যাটে পিউর স্পিন অপশন হতে পারে। বোলিং ও ব্যাটিংয়ে লেট অর্ডার মিলে একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার; এই দলে প্রচ-ভাবে মিসিং।

বৈচিত্র?্য, ভারসাম্য বিবেচনায় এটি আবশ্যক ছিল। সাইফউদ্দিন, আবু হায়দার রনি, মৃত্যুঞ্জয়Ñনাকি অন্য কেউ হবেন জানি না; তবে এটি বড় মিসিং। শহীদুল ইসলামও বিকল্প হতে পারেন। বোলিংয়ে আস্থাশীল, ব্যাটিংয়ে হয়তো উন্নতি লাগবে। গিয়ার বদলের তালিম দিতে কোচরা তো আছেনই।

×