ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

পৃথিবীর চারপাশে ঘুরছে অন্তত ৬টি চাঁদ, চমকপ্রদ দাবি বিজ্ঞানীদের!

প্রকাশিত: ০৯:৫৩, ২৬ জুলাই ২০২৫

পৃথিবীর চারপাশে ঘুরছে অন্তত ৬টি চাঁদ, চমকপ্রদ দাবি বিজ্ঞানীদের!

ছবি: সংগৃহীত

আমরা সবাই জানি, পৃথিবীর একটি মাত্র চাঁদ রয়েছেযেটা রাতের আকাশে চোখে পড়ে। কিন্তু সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এক গবেষণায় জানিয়েছেন, আমাদের গ্রহের চারপাশে আরও অন্তত ছয়টি ‘মিনিমুন’ বা ক্ষুদ্র চাঁদ ঘুরে বেড়াচ্ছে, যেগুলোর কথা আগে অনেকেই জানতেন না।

মহাকাশে ছোট ছোট চাঁদের ভিড়

যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, জার্মানি, ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক গবেষকদল জানায়, এসব মিনিমুন সাধারণত প্রায় ৬ ফুট ব্যাসের হয়ে থাকে এবং ধারণা করা হচ্ছেএগুলো চাঁদের পৃষ্ঠে উল্কাপিণ্ডের আঘাতে বিচ্ছিন্ন হওয়া অংশ।

চাঁদের টুকরো থেকেই জন্ম

গবেষণায় বলা হয়, কোনো গ্রহাণু চাঁদের গায়ে আঘাত করলে ধুলা ও পাথরের টুকরো ছিটকে পড়ে মহাশূন্যে। এর মধ্যে কিছু টুকরো পৃথিবীর মহাকর্ষবলয়ে আটকে গিয়ে সাময়িক কক্ষপথে ঘুরপাক খায়। এই টুকরোগুলোকে ‘লুনার ইজেক্টা বলা হয়।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ ধরনের মিনিমুন বেশিরভাগ সময় কয়েক মাস বা বছর পৃথিবীর চারপাশে ঘোরে, তারপর সূর্যের আকর্ষণে আবার মহাশূন্যে হারিয়ে যায়। কখনো কখনো এগুলো পৃথিবী বা চাঁদের সঙ্গে ধাক্কাও খায়।

গবেষণায় বলা হয়েছে, পৃথিবীর চারপাশে যেসব বস্তু সাময়িকভাবে আবদ্ধ থাকেসেগুলোর ১৮ শতাংশই মিনিমুন হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। তাই গড়ে একসময় পৃথিবী-মুন সিস্টেমে ১ মিটারের বড় প্রায় ৬.৫টি মিনিমুন থাকার সম্ভাবনা থাকে।

রবার্ট জেডিকি, যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক বলেন, “এটা অনেকটা স্কয়ার ড্যান্সের মতোযেখানে সঙ্গী বদলায়, কেউ আসে, কেউ চলে যায়।”

গবেষকরা সম্প্রতি আবিষ্কৃত দুটি মিনিমুনKamo'oalewa এবং 2024 PT5 নিয়ে বিশদভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। Kamo'oalewa, ২০১৬ সালে হাওয়াইয়ের Pan-STARRS1 টেলিস্কোপে ধরা পড়ে, যার আলোক প্রতিফলন ও রাসায়নিক গঠন চাঁদের সঙ্গে মিল পাওয়া গেছে।

২০২৪ সালের ৭ আগস্ট আবিষ্কৃত ২০২৪ পিটি৫-কে গত বছর পর্যন্ত “পৃথিবীর দ্বিতীয় চাঁদ বলা হচ্ছিল। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এটিও মূলত চাঁদেরই অংশ হতে পারে। এর গঠনেও রয়েছে চাঁদের মতো সিলিকেটসমৃদ্ধ শিলা।

চাঁদই কি মিনিমুনের উৎস?

এ আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের দীর্ঘদিনের ধারণা পাল্টে দিতে পারে। আগে মনে করা হতো মিনিমুনগুলো মূলত মঙ্গল ও বৃহস্পতির মাঝে থাকা অ্যাস্টারয়েড বেল্ট থেকে আসে। তবে নতুন গবেষণা বলছে, অনেক মিনিমুনই সম্ভবত চাঁদেরই ভাঙা অংশ।

চাঁদের জন্ম: এক মহাজাগতিক সংঘর্ষ

প্রচলিত ‘Giant Impact Hypothesis’ অনুযায়ী, প্রায় ৪০০ কোটি বছর আগে পৃথিবীর সঙ্গে মঙ্গল আকৃতির একটি গ্রহের সংঘর্ষে বিশাল বিস্ফোরণ ঘটে। সেই বিস্ফোরণে ছিটকে যাওয়া উপাদানগুলো মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরে ঘনীভূত হয়ে গঠন করে আজকের চাঁদ।

 

সূত্র: ডেইলি মেইল।

রাকিব

×