
ছবিঃ সংগৃহীত
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিমান দুর্ঘটনায় নিহত সাহসী শিক্ষিকা মাহরিন চৌধুরীর সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেছেন বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) ঠাকুরগাঁও সেক্টর এবং বিজিবি পরিচালিত ওই সেক্টরের আওতাধীন স্কুল ও কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে বিজিবির একটি প্রতিনিধিদল নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বগুলাগাড়ী চৌধুরীপাড়া গ্রামে মাহরিন চৌধুরীর পারিবারিক কবরস্থানে গিয়ে তাঁর সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে। এ সময় তাঁরা তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করেন এবং প্রার্থনায় অংশ নেন।
বিজিবি ঠাকুরগাঁও সেক্টর কমান্ডার কর্নেল গোলাম রব্বানী বলেন, “আমরা সবাই অবগত যে মাহরিন ম্যাম ৮০ শতাংশ দগ্ধ হওয়ার পরও আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন তাঁর শিক্ষার্থীদের জীবন রক্ষা করতে। তাঁর এই মহান আত্মত্যাগ, মানবিকতা ও সাহসিকতা পুরো জাতিকে অনুপ্রাণিত করেছে। এই হৃদয়বিদারক ঘটনার জন্য বিজিবি পরিবারও গভীরভাবে অনুতপ্ত। বিবেকের ডাকে সাড়া দিয়ে বিজিবি পরিচালিত বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা এখানে এসে এই মহান মহীয়সী নারীর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পেরে নিজেদের গর্বিত মনে করছি।”
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ঠাকুরগাঁও বর্ডার গার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সাইফ বলেন, “আমাদের বাবা-মায়েরা যে ভরসায় আমাদের স্কুলে পাঠান, সেই ভরসার জায়গাটি মাহরিন ম্যাম আরও শতগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন কীভাবে শিক্ষকরা অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করেন।”
রংপুর বর্ডার গার্ড স্কুলের শিক্ষার্থী আসিফ বলেন, “মাহরিন ম্যাম আমাদের অনুপ্রেরণা। তাঁর মতো শিক্ষকদের কারণেই সমাজে এখনো মূল্যবোধ বেঁচে আছে। বাবা-মায়ের পরে শিক্ষকের যে অবস্থান, মাহরিন ম্যাম তা আবারও প্রমাণ করলেন। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, বাবা-মায়ের মতো শিক্ষকরাও তাঁদের সন্তানের জীবন রক্ষায় জীবন দিতে পারেন।”
উল্লেখ্য, সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা মাহরিন চৌধুরী নিজের জীবন বিপন্ন করে অন্তত ২০ শিক্ষার্থীর প্রাণ রক্ষা করেছিলেন। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তিনি মারা যান। তাঁর শরীরের ৮০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।
ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেল ৪টায় নিহত শিক্ষিকার গ্রামের বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরীপাড়াস্থ বগুলাগাড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের পাশে তাঁকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।
ইমরান