
ঠাকুরগাঁওয়ে বেড়েই চলেছে গবাদি পশুর ভাইরাসজনিত লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি)। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে গত দুই মাসে অন্তত ৭২টি গরু প্রাণ হারিয়েছে। একই সময়ে জেলার পাঁচটি উপজেলায় এ রোগে ৩ হাজার ৩৮০টি গরু আক্রান্ত হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, আক্রান্ত গরুর সঠিক চিকিৎসা না হলে মৃত্যুর হার আরও বাড়তে পারে।
এদিকে সরকারি পশু হাসপাতালে এই রোগের কার্যকর প্রতিষেধক সরবরাহ না থাকায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন সাধারণ কৃষক ও খামারিরা।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আক্রান্ত গরুগুলোর মধ্যে ১ হাজার ৪২৮টি গরু বিভিন্ন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে চিকিৎসা নিয়েছে। তবে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা মনে করছেন, বাস্তবে এ রোগে আক্রান্ত ও মৃত গরুর সংখ্যা আরও বেশি।
সদর উপজেলার সালন্দর গ্রামের কৃষক নুর আলম বলেন, ‘আমার দুটি গরু ছিল। হঠাৎ দেখি গরুর শরীরে দানা দানা ফোসকা উঠছে, জ্বরও আসে। খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। বাজারে নিয়ে যাওয়ার সুযোগও পাইনি—পাঁচ দিনের মধ্যে একটা মারা গেল। আরেকটাও খুবই দুর্বল। মাথায় হাত দিয়ে বসে আছি।’
হরিপুর উপজেলার খামারি আবুল হাশেম বলেন, ‘১০টি গরু নিয়ে খামার শুরু করেছিলাম। এর মধ্যে তিনটি আক্রান্ত। একটি মারা গেছে, বাকি দুটিও ভালো না। ডাক্তার এসে শুধু বলছে আলাদা করে রাখতে, নাপা খাওয়াতে। এত বড় গরুকে নাপা দিলে কী হবে?’
বিশেষজ্ঞদের মতে, লাম্পি ভাইরাসে মৃত্যুহার তুলনামূলকভাবে কম হলেও অর্থনৈতিক ক্ষতি ব্যাপক। দুধ উৎপাদন ও বাজারমূল্য হ্রাস পাওয়ায় খামারিরা চরম ক্ষতির মুখে পড়ছেন। আগাম প্রতিরোধ, টিকাদান ও সচেতনতাই হতে পারে এই রোগ মোকাবিলার কার্যকর উপায় বলে মনে করছেন তারা।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইজাহার আহমেদ খান বলেন, ‘লাম্পি ভাইরাসজনিত একটি সংক্রামক রোগ। আক্রান্ত পশুর কাছ থেকে অন্য পশুতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে এই রোগের প্রতিষেধক নেই। তবে আমরা নিয়মিত চিকিৎসা দিচ্ছি এবং আক্রান্ত গরু আলাদা করে রাখার পরামর্শ দিচ্ছি।’
সানজানা