
ইউরোপের অন্যতম পরাশক্তি ফ্রান্স ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন শুক্রবার এক ঘোষণায় জানান, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আসন্ন অধিবেশনে ফ্রান্স আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ফ্রান্সের এই অবস্থান অন্যান্য প্রভাবশালী দেশগুলোকে অনুপ্রাণিত করতে পারে। ফলে ইসরাইল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও কোণঠাসা হয়ে পড়তে পারে।
এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশের মধ্যে ১৪৭টি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে রাশিয়া, চীন ও ভারত। গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যেই সম্প্রতি ১০টি দেশ ফিলিস্তিনকে সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদা দিয়েছে, যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে স্বীকৃতি দেয়া দেশের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম।
বর্তমানে ইইউ’র ২৭ সদস্যের মধ্যে মাত্র ১২টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। গত বছরই এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্পেন। ধারণা করা হচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরবর্তী দুটি দেশ হতে পারে মালটা ও বেলজিয়াম।
এছাড়াও, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও জাপানের ওপরও স্বাধীন ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি হতে পারে। ইতোমধ্যেই ব্রিটেনের দুই শতাধিক এমপি প্রধানমন্ত্রী রিশি সুনাককে একটি চিঠি দিয়ে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর একটি টুইট ঘিরে দেশটির ইতিবাচক অবস্থান নিয়ে জোর আলোচনা চলছে।
বিশ্লেষকদের মতে, যদি যুক্তরাজ্য ফ্রান্সের পথ অনুসরণ করে, তাহলে নিরাপত্তা পরিষদের ইউরোপীয় দুই স্থায়ী সদস্য দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে। জার্মানির নিকট ভবিষ্যতে এই পথে হাঁটার সম্ভাবনা না থাকলেও যুক্তরাজ্য ও কানাডা নজরে রাখা দরকার।
তবে ফ্রান্সের এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র। তেল আবিবের ভাষায়, এটি “সন্ত্রাসবাদের কাছে আত্মসমর্পণ”। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারকোরবিও মন্তব্য করেছেন, “বেপরোয়া এই পদক্ষেপ হামাসের কাছে জিম্মি ইসরায়েলিদের গালে চপেটাঘাত।”
অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, “এটা তার (ম্যাক্রনের) সিদ্ধান্ত। আমি এতে কিছু বলার নেই। ম্যাক্রন একজন অন্যধাঁচের মানুষ। তবে ভালো দিক হলো,তার কথা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়।”
বিশ্লেষকদের মতে, ম্যাক্রনের এই পদক্ষেপ নতুন করে আন্তর্জাতিক পরিসরে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্বীকৃতির বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে। আগামি দিনগুলোতে বিশ্ব রাজনীতির ভারসাম্যে এর প্রভাব পড়তে পারে।
Jahan