ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

৩৪০ মিলিয়ন বছর পুরানো শার্কের দাঁত পেলেন বিজ্ঞানীরা, ইতিহাসের ধারাই বদলে যেতে পারে!

প্রকাশিত: ১৬:৫৭, ২৬ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৬:৫৮, ২৬ জুলাই ২০২৫

৩৪০ মিলিয়ন বছর পুরানো শার্কের দাঁত পেলেন বিজ্ঞানীরা, ইতিহাসের ধারাই বদলে যেতে পারে!

ছবি: সংগৃহীত

কেন্টাকির ম্যামথ কেভ ন্যাশনাল পার্ক থেকে এমন একটি জীবাশ্ম দাঁত আবিষ্কার করা হয়েছে, যা আগে অজানা একটি প্রাচীন শার্ক প্রজাতির। এই দাঁতের বয়স আনুমানিক ৩৪০ মিলিয়ন বছর। নতুন প্রজাতিটির নাম রাখা হয়েছে ম্যাকাডেন্স অলসনি (Macadens olsoni)। এটি স্টে জেনেভিভ ফরমেশনে পাওয়া গেছে, যা লেট মিসিসিপিয়ান যুগের।

প্রায় আধা ইঞ্চি দীর্ঘ এই দাঁতটি প্রাগৈতিহাসিক সামুদ্রিক জীবজগত সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিস “শার্ক উইক” শুরু হবার ঠিক পরই এই আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করে, যা প্রাচীন শার্ক সম্পর্কে জনসাধারণের আগ্রহ আরও বাড়িয়েছে।

পার্ক সুপারিনটেনডেন্ট বার্কলে ট্রিম্বল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, “এই আবিষ্কার আমাদের প্রাচীন সামুদ্রিক জীবের জ্ঞানকে বিস্তৃত করেছে এবং আমাদের প্রাকৃতিক ইতিহাস সংরক্ষণ ও অধ্যয়নের গুরুত্বকে ফুটিয়ে তোলে।”

ম্যাকাডেন্স অলসনি তার বিশেষ দাঁতের গঠন ‘টুথ হর্ল’ এর জন্য পরিচিত, যা ছোট সামুদ্রিক প্রাণী চূর্ণ করতে সাহায্য করতো। এই শার্কের দৈর্ঘ্য এক ফুটের কম ছিল এবং এটি সম্ভবত শামুক ও কেঁচো খেতো। স্টে জেনেভিভ ফরমেশন, যেখানে এই জীবাশ্ম পাওয়া গেছে, প্রায় ৩৪০ থেকে ৩৩৫ মিলিয়ন বছর পুরানো। তখন ম্যামথ কেভ ছিল একটি উষ্ণ ও অগভীর সমুদ্র যা প্রাণবৈচিত্র্যে ভরপুর ছিল, যেখানে ক্রিনয়েড ও কোরালসহ নানা প্রজাতি বাস করত।

নতুন নামকরণ ম্যাকাডেন্স অলসনি ম্যামথ কেভ এবং রিকার্ড অলসন নামে অবসরপ্রাপ্ত পার্ক বিজ্ঞানীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাখা হয়েছে, যিনি সাম্প্রতিক প্যালিওনটোলজিক্যাল রিসোর্স ইনভেন্টরির অংশ হিসেবে শার্ক জীবাশ্ম নথিভুক্ত করার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছে ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিস প্যালিওনটোলজি প্রোগ্রাম, ম্যামথ কেভ ন্যাশনাল পার্ক এবং স্মিথসোনিয়ান প্যালিওবায়োলজি ডিপার্টমেন্টের বিজ্ঞানীরা। ম্যাকাডেন্স অলসনির পাশাপাশি গবেষকরা আরেকটি প্রাচীন শার্ক প্রজাতি হেলোডাস কক্সানুস (Helodus coxanus)-এর ওপরও গবেষণা করেন, যেটিকে এখন রোটুলাডেন্স (Rotuladens) অর্থাৎ ‘হুইল টুথ’ নামে পুনঃনামকরণ করা হয়েছে। এই প্রজাতিটি ম্যাকাডেন্স অলসনির সঙ্গে মিল রেখে প্রাচীন সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের বৈচিত্র্যকে তুলে ধরে।

ট্রিম্বল আরও বলেন, “এই আবিষ্কার শুধু প্রাচীন সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান বৃদ্ধি করেনি, বরং আমাদের জাতীয় উদ্যানগুলোতে প্যালিওনটোলজিক্যাল গবেষণার অপরিহার্য ভূমিকা প্রমাণ করে। প্রতিটি আবিষ্কার অতীতকে বর্তমানের সঙ্গে যুক্ত করে এবং শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের জন্য অমূল্য শিক্ষামূলক সুযোগ সৃষ্টি করে।”

আবির

×