ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

স্প্যানিশ মেয়েদের ইতিহাসের হাতছানি

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:১৯, ২৭ জুলাই ২০২৫

স্প্যানিশ মেয়েদের ইতিহাসের হাতছানি

ইউরোর ফাইনালে ওঠার এই আনন্দ কি শিরোপার উৎসবে রূপ দিতে পারবে স্প্যানিশ নারী দল

আজ ফাইনাল খেলার মধ্য দিয়ে পর্দা নামবে নারী ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫ আসরের। প্রথমবারের মতো ইতিহাস গড়ে এই টুর্নামেন্টে শিরোপা লড়াইয়ের জন্য ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে স্পেন নারী ফুটবল দল। অন্যদিকে ইংলিশরা জিতলে সেটি হবে তাদের নারী ইউরোর ইতিহাসে দ্বিতীয় শিরোপা। বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় সুইজারল্যান্ডের সেন্ট জ্যাকব পার্কে দুই দল শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে লড়বে।

অবশ্য এবারের আসরে ইংল্যান্ডকে ফেভারিট বিবেচনা করা হচ্ছে। এই টুর্নামেন্টে সর্বশেষ ২০২২ সালে আটবারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে ২-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইংলিশরা। এ ছাড়া প্রথম আসর ১৯৮৪ সালে সুইডেনেরে বিপক্ষে ১-১ গোলে ম্যাচ ড্র হওয়ার পর, টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হেরেছিল তারা। এরপর ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার ফাইনালে হেরেছিল ইংল্যান্ড। সেবার জার্মানি ৬-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল তাদের।
এ দিকে প্রথম সেমিফাইনালে জার্মানিকে ১-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট কাটে স্পেন। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ইতালিকে ২-১ ব্যবধানে পরাজিত করে ফাইনালে জায়গা করে নেয় ইংলিশরা। এর আগে ‘বি’ গ্রুপ থেকে তিন ম্যাচে সব জিতে ৯ পয়েন্ট নিয়ে নকআউট নিশ্চিত করে স্পেন। প্রথম ম্যাচে পর্তুগালকে ৫-০, দ্বিতীয় ম্যাচে বেলজিয়ামকে ৬-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে স্প্যানিশরা। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ইতালির বিপক্ষে ৩-১ গোলে জয় নিয়ে হাসি মুখে মাঠ ছাড়ে আইতানা বোনামোতিরা।

এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে আয়োজক সুইজারল্যান্ডকে ২-০ গোলে হারায় স্পেন। ইংল্যান্ড ‘ডি’ গ্রুপ থেকে ৩ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপসেরা হয়ে নকআউটে জায়গা করে নেয়। সেখানে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ফ্রান্সকে ২-১ গোরে হারানোর পর নেদারল্যান্ডসকে ৪-০ ও ওয়েলসকে ৬-১ উড়িয়ে দেয় ইংলিশরা। এরপর নকআউটে সুইডেনের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র হওয়ার পর টাইব্রেকারে ৩-২ ব্যবধানে জয় পায়।
এবারের আসরে দুই দলের পারফরম্যান্স প্রায় সমান হলেও শিরোপার জন্য বেশি মুখিয়ে আছে বিশ^ চ্যাম্পিয়ন স্পেনের মেয়েরা। গত দুই বছরে স্পেন বিশ্বকাপ ও উয়েফা নেশন্স লিগ জিতেছে। এবার ইউরোর ট্রফিও নিজেদের করে নিতে চায় তারা। তেমন কিছু করতে তাদের হারাতে হবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের। সেমিফাইনালে ইতিহাস গড়ে জার্মানিকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবার ফাইনালে পা রাখে স্পেন।

যদিও রোমাঞ্চকর এই ম্যাচের ৯০ মিনিট ছিল গোলশূন্য ড্র, এরপর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটও অপরিবর্তিত স্কোরবোর্ড নিয়ে শেষের পথে ছিল। তবে টাইব্রেকারে যাওয়ার মিনিট সাতেক আগে জয়সূচক গোলটি করেছেন আয়তানা বোনমতি। মজার ব্যাপার হলো টুর্নামেন্টের আগে হাসপাতালের বিছানায় ছিলেন স্প্যানিশ এই মিডফিল্ডার।
নারী ইউরো শুরুর আগমুহূর্তে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন ভাইরাল মেনিনজাইটিসে ভোগা বোনমাতি। ঠিকঠাক খেলা নিয়েও সংশয় ছিল এই বার্সেলোনা তারকার। এরপর অবশ্য ইউরোর পাঁচ ম্যাচেই তিনি খেলেছেন। তবে দুইবারের ব্যালন ডি’অরজয়ী বোনমাতির গোল পাওয়া হচ্ছিল না। সেমিফাইনালেই করলেন কাক্সিক্ষত গোল। যা স্প্যানিশ মেয়েদের টাইব্রেকারের মতো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে দেয়নি।

ইউরো সেমিফাইনালে আগে ১০টির মধ্যে ৯টিই জেতা জার্মান দল মনে করেছিল হয়তো খেলা টাইব্রেকারে যাবে। কিন্তু ১১৩ মিনিটে বোনমাতির দুর্দান্ত মুহূর্ত সেই সম্ভাবনা শেষ করে দেয়। বোনামতির বীরত্বপূর্ণ গোলে নারী ইউরোর ফাইনাল জায়গা করে নেয় স্পেন। ২৭ বছর বয়সী এই বার্সেলোনা মিডফিল্ডার বলেন, ‘আমি গর্বিত। আমরা এটি প্রাপ্য ছিলাম।

আমরা দুর্দান্ত একটি টুর্নামেন্ট খেলেছি। (ম্যাচে) আমরা ভুগেছি, জার্মানির বিপক্ষে খেলা সহজ ছিল না। কিন্তু ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের পথে এমন একটি ম্যাচ জেতার চেয়ে বেশি আর কী চাওয়া যায়?’ তবে ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে নতুন ইতিহাস গড়তে চায় স্পেন।

প্যানেল হু

×