ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

‘আত্মবিশ্বাস হোক আরও নিখাঁদ’

শাকিল আহমেদ মিরাজ

প্রকাশিত: ০১:১৬, ২৭ জুলাই ২০২৫

‘আত্মবিশ্বাস হোক আরও নিখাঁদ’

খালেদ মাসুদ পাইলট

নিজেদের টি২০ ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়। নিঃসন্দেহে অনেক বড় অর্জন। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, মিরপুরের উইকেটে এমন লো-স্কোরিং ম্যাচ জিতে আসন্ন এশিয়া কাপের জন্য কতটা প্রস্তুত হতে পারল টাইগাররা? যখন দেড় মাসও হাতে নেই। বিসিবি আরেকটি সিরিজি খেলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সেটি না হলে এটিই এশিয়া কাপের আগে শেষ সিরিজ। ২০২২ বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মতো বড় দুটি দলের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের পরও বিশ্বমঞ্চে খাবি খেয়েছিল বাংলাদেশ।

পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরের উইকেটে এবারের সাফল্য দলকে ‘ফেক আত্মবিশ্বাস’ দিল কিনা, ক্রিকেট মহলে সেই প্রশ্নও আছে। সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট পুরোপুরি সেই পরিস্থিতির সঙ্গে মেলাতে চাইছেন না। কারণ মাত্রই শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে এসেছে লিটন দাসের দল। তবে উইকেট, আবহাওয়া, পারিপার্শ্বিক অবস্থার বিচারে আত্মবিশ্বাসটাও যুক্তিপূর্ণ হওয়া উচিত বলে মনে করেন আইসিসি ট্রফি জয়ী এ ক্রিকেটার।
‘সিরিজ জিতলে অধিনায়ক আত্মবিশ্বাসী হবেন, এটা খুবই স্বাভাবিক। ঠিক এর আগে শ্রীলঙ্কার মাটিতে স্পোর্টিং উইকেটে খেলেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে ওরা। সেখানে প্রথম ম্যাচে হারের পর সিরিজ জিতে এসেছে। আর এবার ঘরের মাঠে পাকিস্তান সিরিজেও আমাদের ক্রিকেটাররা প্রতিপক্ষকে বিট করেছে। দুটি ম্যাচেই ব্যাটিংয়ে, বোলিংয়ে ওদেরকে দাঁড়াতে দেয়নি। তৃতীয় ম্যাচটাও কিন্তু ভালো হওয়ার সুযোগ ছিল। যদি এসঙ্গে একাদশে এত বেশি পরিবর্তন না আসত। শুরুতেই যদি পাকিস্তান ওপেনার সাহেবজাদা ফারহানকে ফেরানো যেত...।

আমার মনে হয় পাকিস্তান নিজেদের কন্ডিশনে বড় রানের ম্যাচ খেলার পর ঢাকার কন্ডিশন নিয়ে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা করে আসেনি।’ ১৪ মাস পর হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে টি২০ সিরিজ। এই সিরিজের আগে পর্যন্ত যেখানে প্রথম ইনিংসে দলীয় রানের গড় ছিল মাত্র ১২৫! অনেক সমালোচনার পর বিপিএলে কিছু ম্যাচে রান উঠেছিল। কিন্তু  বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজে সেই চেনা দৃশ্য।

প্রথম ম্যাচে পাকিস্তান অলআউট হয় ১১০ রানে। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ করে ১৩৩ রান। জবাবে ১২৫ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। তৃতীয় ম্যাচে অবশ্য ৭ উইকেটে ১৭৮ রান তুলেছিল সফরকারীরা। জবাবে ১০৪ রানে অলআউট হয় একাদশে পাঁচ পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশ। 
পাকিস্তান কোচ মাইক হেসন এবং অধিনায়ক আগাস সালমান বলেছেন, এশিয়া কাপের আগে এমন উইকেট মোটেই আদর্শ নয়। খুব কি বাড়িয়ে বলেছেন? লিটনদের  প্রশংসায় ভাসালেও উইকেট প্রসঙ্গ এড়িয়ে যেতে পারলেন না পাইলট,‘বাংলাদেশের এই উইকেটে আমরা ম্যাচ জিতেছি, সিরিজ জিতেছি, আত্মবিশ্বাস তৈরি করেছি। সব ভালো। কিন্তু এটা দিয়ে আবার বিচার করলে হবে না যে আমরা বিশ্ব মঞ্চে ভালো দল হয়ে গেছি।

উইকেটে আপনাকে অনেক হেল্প করেছে। কোচ বলেছে আমি তার সঙ্গে এই জায়গায় একমত। তবে আমি মনে করি বর্ষাকালে এর চেয়ে ভালো উইকেট আর হবে না। এখানে ১৫০-এর ওপরে রান হওয়াটা অস্বাভাবিক। ১৫০ হলে আপনি তো সেভাবেই খেলবেন। পাকিস্তান তেমন খেলতে পারছে না,  বাংলাদেশ দল কিন্তু সেভাবে খেলেছে। বিশ্ব ক্রিকেটে কিন্তু এখন ২০ ওভারে ২২০ থেকে ২৫০ রান এমনিতেই হয়ে যায়। সেই কথা চিন্তা করলে আমাদের বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হবে।’

সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের মতো তারকা ক্রিকেটারও বলেছিলেন, মিরপুরে খেললে যে কোনো ব্যাটারের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। যার সবচেয়ে বড় উদাহরণ ২০২১ বিশ্বকাপ। সেবার বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি হিসেবে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার, নিউজিল্যান্ডের মতো দলের সঙ্গে সিরিজ খেলেছিল। 
লো স্কোরিং ম্যাচে রীতিমতো দাপুটে জয় পেয়েছিল টাইগাররা। তুমুল আত্মবিশ্বাস নিয়ে বাংলাদেশ খেলতে যায় বিশ্বকাপ। কিন্তু ফল সেই পুরোনো বাংলাদেশ, ব্যর্থ বাংলাদেশ। পাইলট মনে করেন এ ধরনের উইকেটে খেলে কোনোভাবেই বিশ্ব ক্রিকেটের সঙ্গে তুলনা করা যাবে না। পাকিস্তান দলও পরিকল্পনা ছাড়াই ক্রিকেট খেলেছে, তিনি বলেন,‘আমার মনে হয় পাকিস্তান দল পরিকল্পনা ছাড়াই ক্রিকেট খেলেছে। বড় দল হলেই তো হয় না, অনেক টিম আছে যারা গুছিয়ে ওয়ান টু ওয়ান পরিকল্পনা করে।

প্যানেল হু

×