ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

 ট্রাম্পের পাকিস্তানপ্রীতি কি নতুন কোনো চাল? জেনে নিন কী সেই চাল

প্রকাশিত: ০৯:২৮, ২৭ জুলাই ২০২৫

 ট্রাম্পের পাকিস্তানপ্রীতি কি নতুন কোনো চাল?  জেনে নিন কী সেই চাল

ট্রাম্পের পাকিস্তানপ্রীতি

 স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে সামরিক সহায়তা, আর্থিক অনুদান ও কূটনৈতিক সমর্থনের মাধ্যমে পাকিস্তানের পাশে ছিল ওয়াশিংটন। গত এক দশকে সেই পুরনো সম্পর্ক ক্রমেই জীর্ণ হয়ে পড়ে। জঙ্গিবাদ, চীন ঘেঁষা নীতিমালা ও অভ্যন্তরীণ সংকটের কারণে পাকিস্তানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহে ভাটা পড়ে।

কিন্তু সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে হঠাৎ করেই যেন যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে। চলতি বছরের মে মাসে ভারত ও পাকিস্তান যখন সীমান্ত সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে, তখনই মধ্যস্থতা করে পরিস্থিতি ঠান্ডা করে যুক্তরাষ্ট্র। এই শান্তিপূর্ণ হস্তক্ষেপের পুরো কৃতিত্বই ট্রাম্পের কাঁধে তুলে দেয় ইসলামাবাদ।

এমনকি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ২০২৬ সালের শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব দেয় পাকিস্তান সরকার। হোয়াইট হাউসও এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানায়।

এই অনুকূল পরিবেশে ট্রাম্প পাকিস্তানের প্রতি নিজের সদিচ্ছার প্রকাশ ঘটান আরও এক ব্যতিক্রমী উপায়ে- হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজে আমন্ত্রণ জানান পাকিস্তানি সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনীরকে। ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো কোনো পাকিস্তানি সেনাপ্রধানকে এমন কূটনৈতিক সম্মান জানালেন একজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

কিন্তু এই একই ট্রাম্প সাত বছর আগে পাকিস্তানকে ‘মিথ্যা ও প্রতারণার কারখানা’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। এমনকি তার উত্তরসূরি জো বাইডেন পাকিস্তানকে বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক দেশ বলে উল্লেখ করেছিলেন।

তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চিরস্থায়ী শত্রু বা মিত্র বলে কিছু থাকে না- এ কথা আবারও প্রমাণ করছে এই নবজাগ্রত সম্পর্ক। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকা সত্ত্বেও অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে দুর্বল পাকিস্তান এখন ট্রাম্প প্রশাসনের মন জয় করতে চাইছে নানা আকর্ষণীয় প্রস্তাব দিয়ে- শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা, রেয়ার আর্থ মিনারেল সরবরাহ, এমনকি ব্লকচেইন ও ক্রিপ্টো বিনিয়োগে মার্কিন অংশীদারিত্ব।

সম্প্রতি পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার ওয়াশিংটন সফরকালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে পাকিস্তানের আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করে যুক্তরাষ্ট্র।

সব কিছু মিলিয়ে প্রশ্ন উঠেছে- এ কি শুধুই একটি সাময়িক রাজনৈতিক সৌজন্য? নাকি দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব প্রতিরোধে পাকিস্তানকে ঘিরে নতুন এক কৌশল সাজাচ্ছে ট্রাম্প? উত্তর সময়ই বলবে, তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্র আবারও পাকিস্তানের কাঁধে হাত রাখতে শুরু করেছে।

তাসমিম

×