ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনসহ আট দাবি পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের

প্রকাশিত: ১৪:১৩, ২৭ জুলাই ২০২৫

সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনসহ আট দাবি পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের

সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনসহ আট দাবিতে আগামী ১২ আগস্ট সকাল ৬টা থেকে ১৫ আগস্ট সকাল ৬টা পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো।

রোববার (২৭ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা।

লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব সাইফুল আলম বলেন, সম্প্রতি ২০ ও ২৫ বছরের পুরোনো যানবাহন সড়ক থেকে সরানোর নির্দেশনায় বিভিন্ন জেলায় ধর্মঘট ডাকা হয়, যা অচলাবস্থার শঙ্কা তৈরি করেছে। এ পরিস্থিতি নিরসনে ২০ জুলাই অনুষ্ঠিত এক যৌথ সভায় ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানানো হয়। দাবি না মানলে ১২ আগস্ট থেকে সারাদেশে ধর্মঘটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

লিখিত বক্তব্যে মালিক সমিতির মহাসচিব সাইফুল আলম যে দাবিগুলো উপস্থাপন করেন, সেগুলো হলো:

১. সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮-এর ৯৮ ও ১০৫ নম্বর ধারাসহ মালিক-শ্রমিকদের সুপারিশকৃত ধারাগুলো সংশোধন করতে হবে।

২. বাণিজ্যিক মোটরযানের ইকোনমিক লাইফ ২০ ও ২৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছর পর্যন্ত বিবেচনা করতে হবে।

৩. যেসব গাড়ি ফিটনেস পাবে না বা বায়ুদূষণযন্ত্রের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ করে, সেসব গাড়ি নতুন-পুরোনো যাই হোক না কেন, চলাচলে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।

৪. পূর্বে মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি অপসারণের ক্ষেত্রে যে নিয়ম ছিল, তা হলো—এগুলো মেট্রোপলিটন এলাকায় চলাচল করতে পারবে না; তবে জেলায় বিআরটিএর ফিটনেস সাপেক্ষে চলতে পারবে। এই নিয়ম বহাল রাখতে হবে।

৫. সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বিআরটিএ কর্তৃক ২০ ও ২৫ বছরের পুরোনো গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান স্থগিত রাখতে হবে।

৬. বাজেটে বাণিজ্যিকভাবে চলাচলকারী যানবাহনের ওপর আরোপিত দ্বিগুণ অগ্রিম আয়কর (প্রিজাম্পটিভ ইনকাম ট্যাক্স) কমিয়ে পূর্বের হার বহাল রাখতে হবে।

৭. মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন রাস্তা থেকে সরাতে সহায়ক হিসেবে বাণিজ্যিক রিকন্ডিশন যানবাহন (বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, প্রাইম মুভার) আমদানির মেয়াদ ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১২ বছর করতে হবে।

৮. দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি থানায় আটক হলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মালিকের জিম্মায় দেওয়ার বিধান রয়েছে, যা বাস্তবে কার্যকর হয় না—এই বিধান কার্যকর করতে হবে। পাশাপাশি মেয়াদোত্তীর্ণ পুরোনো যানবাহনের জন্য স্ক্র্যাপ নীতিমালা তৈরি করতে হবে।

এছাড়া, মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন (অটো, টেম্পু, অটোরিকশা) ও বিআরটিএর অনুমোদনবিহীন হালকা যানবাহনের জন্য পৃথক লেনের ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ অধিকাংশ দুর্ঘটনাই এসব যানবাহনের কারণে ঘটে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স ও নবায়ন দ্রুত ডেলিভারি দিতে হবে এবং শ্রমিক ফেডারেশনের ১২ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি কফিল উদ্দিন আহমেদ, কার্যকরী সভাপতি এম. এ. বাতেন, সহসভাপতি মো. তোফাজ্জল হোসেন মজুমদার, বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ, সহ-সাধারণ সম্পাদক এম. হুমায়ূন কবির, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিন আহমেদ, সাবেক সভাপতি ফারুক তালুকদার সোহেল, শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুর রহিম বক্স দুদু এবং সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির খান।

সানজানা

×