ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

ইউএস বাংলাকে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ নেপাল আদালতের!

প্রকাশিত: ১৭:১৩, ২৭ জুলাই ২০২৫

ইউএস বাংলাকে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ নেপাল আদালতের!

ছবি: সংগৃহীত

নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বিশ্বের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ বিমানবন্দর হিসেবে পরিচিত। দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত এই বিমানবন্দরটি ছোট রানওয়ে, ব্যস্ততা, অনুকূল আবহাওয়ার অভাব এবং কর্মীদের দক্ষতার ঘাটতির কারণে প্রায়শই দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে থাকে। পাইলটদের জন্য অবতরণ এখানে এক বিশাল চ্যালেঞ্জ।

 

 

২০১৮ সালের ১২ মার্চ এই বিমানবন্দরে ভয়াবহ এক বিমান দুর্ঘটনা ঘটে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট BS211 ঢাকা থেকে কাঠমান্ডু যাওয়ার পথে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়। ওই ফ্লাইটে থাকা ৭১ আরোহীর মধ্যে ৫১ জন নিহত হন, যা ছিল নেপালের সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্যতম প্রাণঘাতী বিমান দুর্ঘটনা।

দুর্ঘটনার সাত বছর পর, ২০২৫ সালের ২২ জুলাই, নেপালের কাঠমান্ডু জেলা আদালত ঐতিহাসিক এক রায় দিয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম The Kathmandu Post। ওই রায়ে আদালত ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সকে ১৭টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ অতিরিক্ত ২৭ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, পূর্বে বীমা কোম্পানির মাধ্যমে প্রতি পরিবারকে ২০ হাজার ডলার করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল। আদালতের মতে, এই পরিমাণ ক্ষতিপূরণ যথেষ্ট নয়, তাই বাকি অর্থ ইউএস-বাংলাকে বহন করতে হবে।

 

 

 

আদালতের এই রায় সামনে আসার পর ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তারা আদালতের রায়ের বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য পায়নি এবং আদৌ এমন কোনো রায় দেওয়া হয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। ইউএস-বাংলা আরও জানায়, বিষয়টি তাদের লিগাল টিম ইতোমধ্যে খতিয়ে দেখা শুরু করেছে।

ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে ঘিরে এমন দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে বিমানবন্দরে কর্মরত জনবলের দক্ষতা, অবতরণ ব্যবস্থাপনা এবং সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বহুদিন ধরেই এই বিমানবন্দরকে নিরাপত্তার দিক থেকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করে আসছেন।

 

 

এই প্রেক্ষাপটে আদালতের রায় কেবল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের জন্য স্বস্তির বার্তা নয়, বরং বিমান নিরাপত্তা, দায়বদ্ধতা ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার দিকেও বড় বার্তা হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ছামিয়া

×