ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২

সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল

দেশে সংকটের জন্য শতভাগ দায়ী খায়রুল হক, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:২৫, ২৫ জুলাই ২০২৫

দেশে সংকটের জন্য শতভাগ দায়ী খায়রুল হক, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করায় অন্তর্বর্তী সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এবিএম খায়রুল হক দেশে রাজনৈতিক সংকটের জন্য শতভাগ দায়ী। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। 
বিমান দুর্ঘটনায় নিহত উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তিন শিক্ষার্থীর কবর জিয়ারত ও তাদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। 
দেশের একজন বড় শত্রু গ্রেপ্তার হলো মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, বিলম্বে হলেও এবিএম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে, সেজন্য সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সঠিকভাবে তার বিষয়ে তদন্ত হবে এবং সঠিকভাবে তার বিচার কার্য সম্পন্ন হবে সেটাই আমরা আশা করি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাতে চাই যে, যিনি একটা বিরাট পদে থেকে বাংলাদেশের বিশাল ক্ষতি করেছেন এবং সেই পদে থেকে তিনি বাংলাদেশের ভাগ্য নির্ধারণ করার বিষয়ে দায়িত্বে ছিলেন, সেখানে তিনি সেই জায়গায় প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন, রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে সংক্ষিপ্ত যে রায় দিয়েছিলেন, সেটা এবং পরবর্তীকালে পূর্ণাঙ্গ যে রায়, যাতে আকাশ ও পাতাল তফাৎ ছিল, সেটা আমরা মনে করি এই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গেছে। রাজনৈতিক সংকট তৈরিতে নিঃসন্দেহে খায়রুল হক দায়ী ছিলেন। এজন্য তিনি শতভাগ দায়ী।
তার কি ধরনের শাস্তি চান জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, শাস্তির বিষয়টা আমার বলা ঠিক হবে না, তবে আইনগতভাবে যে বিধানগুলো আছে, সেসব বিধান দেখে তাকে প্রসিকিউট করে নিশ্চিত করতে হবে। তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ ওই জায়গায় বসে রাষ্ট্রের ক্ষতি করতে না পারে। আরও যারা এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করি। ফখরুল বলেন, খায়রুল হকের রায়ের পরেই আমাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানটা বাতিল হয়।

এর ফলে,  পরবর্তীকালে যত রকমের রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে, জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা মনে করি, বিচার বিভাগ সবচেয়ে বড় জায়গা, যেখানে মানুষের আস্থা থাকে, সেই আস্থার জায়গা উনি ধ্বংস করেছেন শুধু মাত্র তার রাজনৈতিক চিন্তাভাবনার কারণে। এর মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছেন বলে আমরা মনে করি। 
শিশু একাডেমি ভেঙে ফেলার খবরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা পত্রিকার খবরে  জানতে পেরেছি, শিশু একাডেমির যে ভবন কার্জন হলের উল্টো দিকে হাইকোর্টের পাশে, সেই ভবন ভেঙে ফেলার জন্য কথা-বার্তা চলছে বা এই ধরনের প্রক্রিয়া বা প্রস্তাব নেওয়া হচ্ছে। আমরা এটার বিরোধিতা করি।

এটা শিশুদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের একটা প্রতিষ্ঠান, যেটার মাধ্যমে শিশুদের বিভিন্ন রকমের কার্যক্রম যেমন-  শিশুদের গঠন, তাদের বেড়ে ওঠা, তাদের মনমানসিকতা তৈরি, তাদের এক্সট্রা কারিকুলাম একটিভিটিজ তৈরি করা প্রভৃতির বিষয়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান উদ্যোগ নিয়েছিলেন এবং তিনিই প্রথম শিশু একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এটার সারাদেশে শাখা রয়েছে। সুতরাং এই প্রতিষ্ঠানকে এখান থেকে সরানোটা আমি মনে করি একেবারেই সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না এবং এ বিষয়ে আমাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য যে, আমরা চাই না যে, শিশু একাডেমির ভবনটি সেই জায়গা থেকে স্থানান্তরিত করা হোক বা অন্য জায়গায় দেওয়া হোক। 
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় বিএনপি মহাসচিব উত্তরার দিয়াবাড়ির তারারটেকের কাছে একটি পারিবারিক কবরস্থানে যান। সেখানে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত তিন শিশুর কবর জিয়ারত করেন। পরে নিহত এই তিন শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সমবেদনা জানান।

প্যানেল হু

×